নিউজ ডেস্ক : দাউদ ইব্রাহিমের সহযোগী আবদুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভারতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, গতকাল (৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ মার্চেন্টকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে। পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
ভারতের মুম্বাই পুলিশের অপরাধ শাখা দাউদ মার্চেন্টকে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) আদালতে হাজির করবে বলে পত্রিকাটি জানিয়েছে। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, দাউদ মার্চেন্টকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হবে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এমন বার্তার পর মুম্বাই পুলিশের অপরাধ শাখার চার সদস্যের একটি দল কলকাতা পৌঁছায়। বিষয়টির স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া ও তারিখ নিয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়।
উল্লেখ্য, অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে ধরা পরার পর ৫ বছর ধরে বাংলাদেশের কারাগারে ছিলেন দাউদ মার্চেন্ট। মুম্বাইয়ের সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমারকে ১৯৯৭ সালের ১২ আগস্ট আন্ধেরি এলাকার একটি মন্দির থেকে বেরিয়ে আসার সময় গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। এ হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন ভাড়াটে খুনি দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেফতারের পর ২০০২ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন ভারতের একটি আদালত।
তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দাউদ। পরে ২০০৯ সালে ১৪ দিনের প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর পালিয়ে যান তিনি। ওই বছরের ২৮ মে ভারত সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এক সহযোগীসহ দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের পুলিশ। পাসপোর্ট আইনে একটি মামলা হয়। সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, দাউদ অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করছিলেন। এরপর ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন দাউদ। তবে সেদিনই গাজীপুর থেকে তাঁকে আবার গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেয়া হয়।
দুবাইয়ে থাকা ভারতীয় ‘মাফিয়া ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসাবে পরিচিত দাউদ মার্চেন্টকে গত ৩ নভেম্বর ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় ঢাকার হাকিম আদালত। সেই কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছানোর পর তার মুক্তির ব্যবস্থা করে কারা কর্তৃপক্ষ।
গোয়েন্দা পুলিশ গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ৫৪ ধারার অভিযোগ থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করে। আদালতের অনুমোদনের পর গত চলতি বছরের ৭ নভেম্বর মুক্তি পান দাউদ মার্চেন্ট। তবে তাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেছিলেন, ‘মুক্ত ব্যক্তি ভারতে যাবে না বাংলাদেশে থাকবে সেটা তার ব্যাপার।