নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
ইতালির উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী সিনেটর বেনেদেতো ডেলা ভেদোভা আজ বিকেলে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসবের পেছনে মূল পরিকল্পনাকারী কারা এবং কারা এদের অর্থ ও অস্ত্রের জোগানদাতা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে তাঁর সরকারের উদ্যোগের প্রসংগ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে আমরা জনগণের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পেয়েছি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশের ৬৪ জেলার সকল শ্রেণী পেশার জনগণের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরকারের সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগের ফলে দেশের জনগণ এখন সমাজের এই ব্যাধি সম্পর্কে অনেক বেশি সতর্ক।
গত ১জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এধরনের কোন ঘটনা কখনো প্রত্যাশা করিনি।’
‘আমরা ১০ ঘন্টার মধ্যেই গুলশানের ঘটনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হই এবং পরবর্তিতে আমাদের আইন শৃংখলা বাহিনী বেশ কয়েকটি সফল অভিযানের মাধ্যমে জঙ্গিদের হত্যা ও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুলশান জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহতদের পরিবার পরিজনের প্রতি তাঁর গভীর সমবেদনার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
জবাবে ইতালির উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর এই সমবেদনা ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার পরিজনের কাছে পৌঁছে দেবেন।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সিনেটর বেনেদেতো বলেন, ‘এ বিষয়ে একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে।’
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোবাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহিত পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে।’
সন্ত্রাসীরা জনগণকে ভীত সন্ত্রস্থ এবং দ্বিধাবিভক্ত করে তাদের চলাচলকে সীমাবদ্ধ করে ফেরতে চায় উল্লেখ করে সিনেটর বেনেদেতো বলেন, ইতালিয় ব্যবসায়ী সম্প্রদায় বাংলাদেশে আসতে চায় এবং বিনিয়োগ করতে চায়। তবে, এজন্য তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইতালি বাংলাদেশের তৈরী পোষাক খাত ছাড়াও ‘ব্লু ইকোমনি’র ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে চায় উল্লেখ করে সিনেটর বেনেদেতো বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞ সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের ‘ব্লু ইকোনমি’তে সাহায্য করতে চাই।
ইতালির উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশের ৭ দশমিক ১১ শতাংশ জিডিপি অর্জনের ভূয়শী প্রশংসা করে একে ‘অবিশ্বাস্য বলেও উল্লেখ করেন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে- পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং ঢাকায় নিযুক্ত ইতালিয় রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।