ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ও নাসিরনগর সংবাদদাতা ॥ যে কোন মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। আজ বুধবার বিকালে ১৪ দলের মূখপাত্র ও আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন,তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়াসহ ১৪ দলের একটি প্রতিনিধি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন মন্দির ও বাড়িঘর পরিদর্শন পরিদর্শন শেষে স্থানীয় গৌর মন্দির চত্বরে এক সমাবেশে ১৪ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ এ আহবান জানান। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী এডভোকেট মোহাম্মদ ছায়েদুল হকের সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপির পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ১৪ দলের মূখপাত্র ও আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন,তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি,সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া,পাবর্ত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি র,আ,ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি,জাতীয় পার্টি জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তা, সাবেক মন্ত্রী দীপংকর তালুকদার,অধ্যাপক ড.প্রাণ গোপাল দত্ত,অসিম কুমার উকিল,গনতন্ত্র পার্টির শাহাদাৎ হোসেন,ন্যাপের ইসমাইল হোসেন,বাসদের রেজানুর রশীদ খান,তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ মুক্তাকিন বিল্লাহ,হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, এসকে সিকদার,ড.অসিত বরণ রায়সহ জেলা ও উপজেলা দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
১৪ দলের মূখপাত্র ও আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন নাসিরনগরের ঘটনায় দায়ী যেই হোক ছাড় দেয়া হবে না। দ্রূত বিচার করা হবে। তিনি আরও বলেন ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে।এব্যাপারে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে। কেউ এমন কিছু করবেন না যাতে দলের বদনাম হয়। আগামী নিবার্চনে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব এবং নিবাচির্ত হয়ে সরকার গঠন করব। খালেদা জিয়া আমেরিকার নিবার্চনের দিকে তাকিয়ে ছিল আমাদেরকে শুয়ে দিবে বলে ,এখন খালেদা জিয়া নিজেই শুয়ে গেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের মন্দির পুনঃনিমার্ণসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন সরকার যখন জঙ্গীবাদ বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে যুদ্ধপরাধীদের বিচার করছে সেই সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্যই নাসিরনগরে এ হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা কেউ ছাড় পাবে না। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানান।
তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের ওপর যারা হামলা করেছে তাদের একচুলও ছাড় দেয়া হবে না। বাংলাদেশ যখন বিদেশের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুনাম অর্জন করছে এ ভাব মূর্তি ক্ষুণ করার জন্য আগুন সন্ত্রাসী খালেদা জিয়ার দোসররাই এই কাজ করছে। । মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী এডভোকেট মোহাম্মদ ছায়েদুল হক এমপি বলেন পাশ্ববর্তী উপজেলা মাধবপুর থেকে ১৪ ট্রাক দিয়ে বহিরাগত লোক এনে যারা হামলা করেছিল তাদেরকে সনাক্ত করতে পারলেই আসল রহস্য বের হয়ে যাবে। জাতীয় পার্টি জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তা এ ঘটনায় জড়িতদের খুজেঁ বের করে শাস্তির দাবি জানান্
এদিকে নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘর ও মন্দিরে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা সরেজমিনে তদন্তের জন্য সকালে জাতীয় পার্টির একটি প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন। জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপির নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফকরুল ইমাম এমপি,সুনীল শুভ রায়,ফয়সল চিশতি,চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা কাজী মামুনুর রশিদ,সোমনাথ দে,ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা এমপি ও অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজুসহ জেলা ও উপজেলার দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর (শুক্রবার) নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামের এক যুবক পবিত্র কাবাঘরের ছবি সম্পাদনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর স্থানীয় লোকজন তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার দিনভর নাসিরনগর সদর উত্তাল হয়ে পড়ে। এ অব¯’ায় পরের দিন রবিবার উপজেলা সদরের কলেজ মোড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। সমাবেশ চলাকালে সদরের কয়েকটি মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর হয়।