প্রশ্ন : মহিলাদের স্বামী মারা গেলে নাকফুল, কানের দুল, হাতের চুড়ি এগুলো কি খুলে ফেলতে হবে?
উত্তর : নাকফুল, কানের দুল, হাতের চুড়ি এগুলো খুলে ফেলা বাধ্যতামূলক নয়। সাজসজ্জা করতে নিষেধ করা হয়েছে। সাজসজ্জা করা এককথা আর নাকফুল, কানের দুল যেগুলো পরা আছে, স্বাভাবিক যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকা ভিন্ন কথা। যদি কারো স্বাভাবিক অবস্থা এমনটি হয়, তাহলে তিনি এ অবস্থায় থাকতে পারেন, অসুবিধা নেই।
ওই নারীকে সাজসজ্জা করতে নিষেধ করা হয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর এ সাজসজ্জার দুটি অর্থ থাকে। একটি অর্থ হচ্ছে এই যে, স্বামীর মৃত্যু হয়েছে একটা খুশি প্রকাশ করছে যে আরেকবার বিয়ে করতে পারবেন। কিন্তু তাঁর তো শোক পালন করতে হবে। কিন্তু এর অর্থ হচ্ছে এই যে, এখানে সাজসজ্জা করছে নিজেকে অন্যদের কাছে পেশ করার জন্য অথবা আরেকবার বিয়ে করতে পারবে ইত্যাদির জন্য।
দ্বিতীয় আরেকটি অর্থ হচ্ছে এমন যে, সাজসজ্জা করলে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষিত হতে পারে। অন্যরা তাঁকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব নিয়ে এসে অথবা অন্যভাবে তাঁকে তাড়িত করতে পারে, যেটি ইসলাম অপছন্দ করেছে এ অবস্থায়। কিন্তু বিয়ে তো তাঁর জন্য জায়েজ। যেহেতু স্বামী মারা গেছে, বিয়ে তো তাঁর জন্য জায়েজ রয়েছে।
স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁকে ৪০ দিন শোক পালন করতে হবে না। এটা হলো চার মাস ১০ দিন। এই চার মাস ১০ দিন শোক নয়। এটি হলো ইদ্দত পালন করা। শোক ও ইদ্দত পালনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
ইসলামে শোক পালনের কোনো সুযোগ নেই। এটি হলো শুধু ইদ্দত পালন করবে চার মাস ১০ দিন। এ সময়ের মধ্যে সেই নারী বিয়ে করতে পারবেন না, বিয়ের প্রস্তাব পর্যন্ত গ্রহণ করতে পারবেন না। বিয়ের প্রস্তাবে যেতেও পারবেন না। এটা ইসলামের বিধান এবং ইসলামের এই বিধানের পেছনে অনেক যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে। এ কারণেই মূলত এ বিধান দেওয়া হয়েছে। তাই তিনি সাজসজ্জা করবেন না। স্বাভাবিক নাকফুল, কানফুল, চুড়ি যেটা আছে, সেগুলো থাকতে পারে। এগুলো যদি কারো থেকে যায়, এতে করে কোনো অসুবিধা আছে বলে মনে করা হয় না। অসুবিধা নেই। এটি নাজায়েজ কিছুই নয়। তবে বিশেষ কোনো সাজসজ্জা করা যাবে না।