শেষপর্যন্ত ফেসবুকে নিজের পদটাই হারাতে পারেন জাকারবার্গ
সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না ফেসবুকের। সঙ্গে এটির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মার্ক জাকারবার্গেরও। একের পর এক বিতর্কের মধ্যেই জড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় এই মাধ্যমটি।
মার্কিন নির্বাচনের ভোটারদের তথ্য বেহাত হওয়ার অভিযোগ, কয়েকদিন আগে ‘ভিউ এজ’ ফিচারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে দুই কোটি ৯০ লাখ অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া, এমনকি এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সহিংসতা ছড়ানোর মতো বিভিন্ন অভিযোগে টালমাটাল হয়ে পড়েছে ফেসবুক। এরইমধ্যে ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রস্তাব উঠেছে।
জানা গেছে, বুধবার নাকি সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে ফেসবুকে শেয়ার আছে যুক্তরাষ্ট্রের এমন চারটি বড় পাবলিক ফান্ড। যদিও ফেসবুকের সিংহভাগ শেয়ার নিজের করতলে থাকায় কার্যত হয়তো জাকারবার্গের কিছুই হবে না।
সেটি অবশ্য মানছেন রোড আইল্যান্ডের স্টেট ট্রেজারার সেথ মাগাজিনার। তিনি বলেন, জাকারাবার্গকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার এই প্রস্তাব তারপরও অর্থবহ, কেননা এর মাধ্যমে ফেসবুকের সমস্যা ও তা সমাধানে মনোযোগ আকর্ষণ করা যাবে।
মাগাজিনার আরও বলেন, এর ফলে ফেসবুকের বার্ষিক সভায় বিষয়টি আলোচনা করতে সবাই দায়বদ্ধতা অনুভব করবে। তবে এ বিষয়ে ফেসবুকের মুখপাত্র কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ফেসবুকের বিভিন্ন শেয়ারহোল্ডাররা চাইছে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদ থেকে জাকারবার্গকে সরিয়ে সেখানে স্বাধীন কাউকে নিয়োগ দেয়া হোক। যদিও এসব শেয়ারহোল্ডারের ভাষ্যমতে এতে করে হয়তো সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হবে না, তবে শেয়ারবাজারে ফেসবুকের অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হবে।
যেমনটা বলছিলেন ইলিনয়স স্টেটের ট্রেজারার মাইকেল ফ্রেরিকস। তিনি বলেন, স্বাধীন চেয়ারম্যান হয়তো ফেসবুকের সব ইস্যুর সমাধান করতে পারবেন না। কিন্তু এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির হয়তো কম সমস্যা হবে এবং শেয়ারের দরপতনটাও কিছুটা কমে যাবে।
আগামী বছরের মে মাসে ফেসবুকের বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভাকে টার্গেট করেই প্রতিষ্ঠান বড় শেয়ারহোল্ডাররা এই পরিবর্তনের পরিকল্পনার আশা করছেন।
চলতি বছর ফেসবুকের শেয়ারদর খুব ওঠানামার মধ্য দিয়ে গেছে। গত মার্চে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার সাথে ফেসবুকের কেলেঙ্কারির পর এক দফায় ফেসবুকের শেয়ারদর বেশ অনেকটাই পড়ে যায়। এরপর বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পারলেও জুলাই থেকে আবারও নানা কেলেঙ্কারিতে টালমাটাল হয়ে পড়ে প্লাটফর্মটি। এমনকি গত জুলাই মাস থেকে কোম্পানিটির ৩০ শতাংশ অর্থমূল্য কমে গেছেও বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালেও স্বাধীন একজন চেয়ারম্যান নিয়োগের বিষয়ে শেয়ারহোল্ডাদের একটি প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। কেননা ফেসবুকে জাকারবার্গের সিংহভাগ শেয়ার থাকার কারণে বাইরে থেকে ওঠা কোনও প্রস্তাব কার্যত প্রতীকী। তবে ফেসবুককে বাঁচাতে মরিয়া জাকারবার্গ এখন কী করবেন সেটাই দেখার বিষয়।