নভেম্বরে দুবাইতে খেলার অনুমতি চেয়ে পেলেন না সাকিব
এখনও বাম হাতে কনিষ্ঠা আঙ্গুলের ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। আগেই জানিয়েছিলেন, অন্তত তিনমাস লাগতে পারে তার পুরোপুরি সুস্থ হতে। অথচ, আগামী নভেম্বরে আরব আমিরাতের মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য টি-টেন লিগে খেলার জন্য বিসিবির কাছে অনুমতি চেয়েছেন বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বিসিবির বিশ্বস্ত এক সূত্র থেকে জানা গেছে এ খবর। যদিও, বিসিবি তাকে অনুমতি দেয়নি।তার বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুলের ইনজুরিই ছিল কয়েকদিন আগ পর্যন্ত টক অব দ্য কান্ট্রি। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আঙ্গুলের ব্যাথার কারণে খেলতেই পারেননি। দেশে ফিরে আসেন। এসে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর দেখলেন সংক্রমণ হয়ে গেছে সেখানে। আঙ্গুল ফুলে গেছে। অস্ত্রোপচার করে ডাক্তার সেই আঙ্গুল থেকে পুঁজ বের করেছেন।
সাকিব আল হাসান নিজে তখন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আরেকটু হলে সংক্রমণ হাঁড়ে চলে যেতো এবং তার হাত চিরতরে নষ্ট হয়ে যেতো। তবুও যে অবস্থা আছে, সেখান থেকে মাঠে ফিরে আসতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে।’ এরপর সাকিব গেলেন অস্ট্রেলিয়ায়। আঙ্গুলের সমস্যা একজন শল্যবীদকে দেখানোর জন্য।অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে টিভি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাকিব জানিয়েছিলেন, ‘তার হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল আর কখনও পুরোপুরি ঠিক হবে না। তবে, খেলার মত অবস্থায় এনে দিতে পারবেন ডাক্তাররা।’ সাকিবের এই বক্তব্য ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অনেকেই বিসিবিকে দোষ দিতে শুরু করে। ঝুঁকি নিয়ে কেন তাকে এশিয়া খেলানো হলো? যার পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবি সভাপতি বক্তব্য রাখতে বাধ্য হয়েছেন মিডিয়ায়। তিনি জানিয়েছেন, সাকিব সম্পূর্ণ নিজ ইচ্ছায় খেলেছে এশিয়া কাপে।
শেষ পর্যন্ত সাকিব অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে এলেন। আসার সময় বিমান বন্দরেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি এখন অনেকটা সুস্থ। অস্ত্রোপচার করা লাগবে না। এখন তার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য, আঙ্গুলে আগের মত শক্তি ফিরে পাওয়া। এটার জন্য তিনি রিহ্যাব শুরু করবেন। যাতে দ্রুত আঙ্গুলে শক্তি ফিরে আসে এবং দ্রুত মাঠে নামতে পারেন। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন, যদি শক্তি ফিরে আসে তাহলে হয়তো বা এক মাসের মধ্যেই ব্যাট ধরতে পারবেন, মাঠে নামতে পারবেন।
আরব আমিরাতে টি-টেন লিগে খেলতে অনুমতি চাওয়ার অর্থই হচ্ছে, বোঝা যাচ্ছে তার আঙ্গুলে উন্নতি হচ্ছে দিনকে দিন এবং সাকিব আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন। সেই স্বচ্ছন্দ বোধ করা থেকেই নভেম্বরে দুবাইতে খেলতে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন এবং বিসিবির কাছে অনুমতি চেয়েছেন।সাকিবের অনুমতি চাওয়ার বিষয়টা খুবই গোপনীয়। বিসিবি যথাসম্ভব চেষ্টা করেছে এ বিষয়টাকে গোপন রাখতে। তবুও একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এ তথ্য জানা যায়। সেই সূত্রটিই জানিয়েছে, অনুমতি চাওয়ার পর বোর্ড সরাসরি ‘না’ করে দিয়েছে।
সাকিবকে আরব আমিরাতে খেলতে যাওয়ার ব্যাপারে ‘না’ করার আরেকটি কারাণ আছে। কয়েকদিন আগে বিসিবি পরিচালক এবং ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান মিডিয়াকে বলেছেন, ‘সাকিবের ব্যাপারে আমরা আর কোনো ঝুঁকি নেবো না। ফিজিও এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বসেই কবে কখন মাঠে ফেরানো যায় তা এক সঙ্গে ঠিক করবো।’
সাকিবের ব্যাপে ঝুঁকি না নিতে চাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ, সামনেই বিশ্বকাপ। তিনি সম্পূর্ণ খেলার উপযোগি হলেও বোর্ড তাকে মাঠে নামানোর আগে অনেক কিছুই ভাববে এখন। যেহেতু সামনে বিশ্বকাপ। যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সুস্থ হয়ে উঠলেও তাকে খেলানো নিয়ে ১০বার ভাববে বোর্ড, সেখানে তাকে দুবাইতে খেলতে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।সূত্র:জাগো নিউজ