এমন সুযোগে উচ্ছ্বাস নেই মুমিনুলের
স্পোর্টস ডেস্ক: মুমিনুল হক শেষ মুহূর্তে এশিয়া কাপের দলে সুযোগ পেলেন। তাঁর ক্যারিয়ারে এমন ঘটনা বেশ কয়বার ঘটল। এবার কেমন লাগছে মুমিনুলের? এশিয়া কাপে কীই-বা লক্ষ্য থাকবে তাঁর?
অনেকটা ‘কে হবে কোটিপতি’ অনুষ্ঠানের মতো। আঁতিপাঁতি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ একটা ‘লাইফ লাইন’ পাওয়া গেল, যেটির সাহায্যে সাময়িক উতরে যাওয়া গেল বাধা। মুমিনুল হকের ক্যারিয়ারেও এমন ঘটনা বেশ কবার ঘটল। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাদ পড়েও নাটকীয়ভাবে আবার সুযোগ পেলেন। এবার এশিয়া কাপের দলেও ছিলেন না।
নাজমুল হোসেন শান্তর চোটে সুযোগ পেয়েছেন, তা বলা যাবে না। নাজমুলকে রেখেই মুমিনুলকে দলে যোগ করা হয়েছে ১৬তম সদস্য হিসেবে। সাকিব আল হাসানের ফিটনেস নিয়ে নানা আলোচনা, হঠাৎ তামিমের হাতে চোট আর সর্বশেষ নাজমুল—তিন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের চোট টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচকদের বাধ্য করেছে মুমিনুলকে দলে রাখতে।
চোটে না পড়ার ঘটনা না ঘটলে মুমিনুলের হয়তো সুযোগ মিলত না। অথচ কদিন আগে শেষ হওয়া বাংলাদেশ ‘এ’ দলের আয়ারল্যান্ড সফরে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে তাঁর ব্যাটিং। ৫ ম্যাচে ৭৪.২৫ গড়ে ১০০ স্ট্রাইক রেটে ২৯৭ রান করে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান তিনিই। দুর্দান্ত এ পারফরম্যান্সের পরও মুমিনুল শুরুতে বিবেচিত হননি এশিয়া কাপের বাংলাদেশ দলে। অবশেষ যখন সুযোগ মিলল, তা নিয়েও বিশেষ কোনো অনুভূতি নেই তাঁর, ‘ভালো লাগছে, এই তো! সামনে বড় টুর্নামেন্ট, ভালো করতে পারলে, দলের জন্য কিছু করতে পারলে অনেক বড় অর্জন হবে আমার জন্য।’
টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত লক্ষ্য কী, প্রশ্নটা মুমিনুলকে করাটা অনুচিত। দলে সুযোগ পেতেই যাঁকে বিস্তর কাঠখড় পোহাতে হচ্ছে, একাদশে সুযোগ পাওয়া নিশ্চয়ই আরও কঠিন হবে। ‘যদি’, ‘কিন্তু’ ধরে তাঁকে তাই লক্ষ্যের কথা বলতে হচ্ছে তাঁকে। আর সেটির সারমর্ম, ‘দলের জন্য অবদান রাখা।’ মুমিনুল তৈরি যেকোনো পজিশনেই ব্যাটিং করতে। সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৫ বিশ্বকাপে। লম্বা বিরতিতে এই সংস্করণে ফিরে ভালো করার আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাচ্ছেন সর্বশেষ আয়ারল্যান্ড সফর থেকে। ‘এ’ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষে খেলা ১৮২ রানের ইনিংস আলোচনায় নিয়ে এসেছে বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে। শুধু আলোচনায় আনেনি, তিনি বলছেন, ইনিংসটা অনেক কিছু শিখিয়েছে তাঁকে।
এ ইনিংসটিই শুধু নয়, মুমিনুলকে অনেক শিখিয়েছে আয়ারল্যান্ড সফরটা, ‘প্রতিটি সিরিজে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করি, উন্নতির চেষ্টা করি। পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করি। কখনো হয়, কখনো হয় না। শুধু ওই ইনিংস না, পুরো সিরিজই আমাকে শিক্ষা দিয়েছে। এ নিয়ে বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। ওই সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে খেলেছি। অনেক কিছু শিখেছি। নিজেকে নিয়ে ও দলকে নিয়ে কীভাবে ধারণা পরিষ্কার রাখতে হয়, এটা বুঝেছি। নিজের জন্য নয়, দলকে নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হয়। এভাবে খেললে দলের যেমন ভালো হয়, নিজেরও ভালো হয়।’