সংলাপের উপসংহার …..
নির্বাচন এগিয়ে এলেই মিডিয়া এবং সুশীল সমাজের মধ্যে “সংলাপ” উপাদানটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। তারা নতুন কিছু রান্না করার জন্য তোড়জোড় শুরু করে। তারা যোগ্য প্রার্থী খোঁজে। ভাবটা এরকম যে দেশে সব অযোগ্য লোকদের ছড়াছড়ি। কেউ কেউ সরকার পরিবর্তনের অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অনুসন্ধান শুরু করে, যদি নিজেদের ভাগ্যের শিকে ছিড়ে এই আশায়। এর সবকিছুই শুরু হয় “সংলাপ” নামক উপাদানটি দিয়ে।
সংলাপটি কার সাথে কার। কোনো সংকট সমাধানে সংলাপটি হতে পারে দেশের মধ্যে বিরাজমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবীদের মধ্যে। কিন্তু যারা দেশের মূল অস্তিত্বের জায়গায় নিজেদের এখনো খাপ খাওয়াতে পারেনি তাদের সঙ্গে সংলাপ করার কোনো যৌক্তিকতা আদৌ নেই। জামাত-বিএনপি জোট এখনো পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশকে নিয়ে যেতে চায়, যা দেশের সংবিধান, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের সাথে সাংঘর্ষিক।
এই গোষ্ঠীর সঙ্গে সংলাপ করতে যাওয়া মানে হচ্ছে তাদের পাকিস্তানি ভাবধারা রাজনীতি অর্থাৎ জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস, দূর্নীতির রাজনীতিকে বৈধতা দেয়া। এরপরও এই গোষ্ঠীর অপতৎপরতা রুখতে সংলাপ হয়েছে। কিন্তু তাদের অপতৎপরতা কি থেমেছে?
এই গোষ্ঠী ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। পিতৃহত্যার কষ্ট চেপে রেখে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে ৯০ তে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করেছেন, বসেছেন দেশ ও জনগণের স্বার্থেই। কিন্তু তারা কি দেশের জনগণের স্বার্থকে কখনো সম্মান করেছে ?
শুধু জনগণকে অসম্মানই নয়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে তারা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠনটিকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল।
এরপরও একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে ২০০৬ সালে তাদের সঙ্গে সংলাপে বসেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। সংলাপের সব শর্তই তারা ভঙ্গ করে সংলাপকে ব্যর্থ করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রের ফলে এসেছে সেনা সমর্থিত ১/১১ সরকার।
এরপরও বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমঝোতার স্বার্থে গণভবনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ফোন করেছিলেন বেগম জিয়াকে। বেগম জিয়া বঙ্গবন্ধু কন্যার সঙ্গে কি অশালীন ভাষায় কথা বলেছে মিডিয়ার কল্যাণে জাতি তা জানতে পেরেছে। এরপর বেগম জিয়া পরে জানাবেন বলে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেননি। প্রতিদানে প্রতিদিন নিরীহ মানুষকে অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়ে পুড়িয়ে মেরেছেন। এখনো শত শত মানুষ সেই দুঃসহ ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে।
বেগম জিয়ার সেই অমানবিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে মারা গেলেন তার দুর্নীতির দণ্ডপ্রাপ্ত ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। তখন বেগম জিয়ার অগ্নিসন্ত্রাস চলছিল। সন্তান মারা যাওয়ায় সহানুভূতিশীল হয়ে বেগম জিয়াকে সান্ত্বনা দিতে বেগম জিয়ার গুলশানের অফিস কাম তৎকালীন বাসায় গেলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলেন তারা। প্রায় ৩০ মিনিট বাসার সামনে বঙ্গবন্ধু কন্যা দাঁড়িয়ে ফিরে আসলেন।
এরপরও যারা ফলপ্রসূ সংলাপ খুঁজে তাদেরকে জ্ঞান দেয়ার মেধা কিংবা যোগ্যতা কোনটাই আমার নেই। ফেসবুক থেকে