নির্বাচনে যাওয়ার প্রধান শর্ত খালেদা জিয়ার মুক্তি : বিএনপি
ডেস্ক রিপোর্ট : কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার প্রথম শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপি।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ফখরুল মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে সুষ্ঠ নির্বচনের লক্ষে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে,নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার প্রধান শর্ত হবে খালেদা জিয়ার মুক্তি।
খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, সুচিকিৎসাসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। সমাবেশটি ২টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়ে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে শেষ হয়। দলটির চেয়ারপারসন কারাবন্দী হওয়ার পর এই প্রথম রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করার অনুমতি পায় দলটি।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে আজকে সরকার একটিমাত্র উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী রেখেছে। সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়। তারা খালেদা জিয়াকে আটকে রেখে ফের নির্বাচনের নামে সাজানো নাটক করতে চায়।
কিন্তু আগামী নির্বাচনের প্রথম শর্ত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, খালেদাকে কারাগারে রেখে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, জনগণ নির্বাচন হতে দেবে না।
দেশের মানুষ পরিবর্তন চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ক্ষমতার জন্য নয়, বিএনপির আন্দোলন ও বিএনপি আন্দোলন করছে দেশের মানুষের অধিকার ফিরে আনতে; গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়।
দেশের মানুষ আইনের শাসন পাচ্ছে না। রাজনীতিবিদরা কথা বলতে পারছেন না। এই ধরনের অবস্থা চলতে পারে না। জাতীয় ঐক্যের মাধমে আন্দোলন গড়ে তুলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।
বামপন্থী আটটি দলের নতুন জোটকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া জাতীয় ঐক্যে তাদেরকেও শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে অন্যান্য সব দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য এবং সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য সমস্ত দল ও সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বর্তমান সরকারের দুঃশাসন যেভাবে বুকে চেপে আছে, তার থেকে মুক্তির জন্য জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না দিলে কোনও নির্বাচন হবে না । যতক্ষণ পর্যন্ত না বেগম জিয়া মুক্তি পায়, বিএনপি ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনে যাবে না। এই সরকার অবৈধ্য সরকার, এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচন নয়। দেশের সকল নাগরিক এই সরকারের এখন পদত্যাগ চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার অনির্বাচিত অবৈধ। এদের হাত থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। এরা দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির মাধ্যমে ভয়ের রাজ্য তৈরি করেছে। দেশের প্রতিটি মানুষ অনিরাপদ। তারা স্বাভাবিক মুত্যুর গ্যারান্টি চায়।
বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম সমাবেশ সঞ্চালনায় ছিলেন। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম প্রমুখ।