ঈদের দিনে বিনোদন কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড়
নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। সকাল থেকেই ছোট-বড় সকলের উপস্থিতিতে ঈদের আনন্দ যেন পূর্ণতা পেয়েছে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। সরেজমিনে বিনোদনকেন্দ্রগুলো এমন চিত্র দেখা গেছে।
শাহবাগের শিশুপার্ক ছিল সকাল থেকেই মুখরিত। সকাল ১০টার আগে থেকেই দর্শনার্থীরা এখানে ভিড় করতে শুরু করেন। দুপুর নাগাদ ভিড় বেড়ে গেলে লম্বা লাইন পেরিয়ে রাইডে উঠতে দেখা যায়। এ সময় শিশুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে শিশুপার্কটি। বিভিন্ন রাইডে চড়ে ও খোলামেলা পরিবেশ পেয়ে আনন্দে মেতে ওঠে শিশুরা। শিশুদের সঙ্গে অনেক অভিভাবককেও আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায়।
সাত বছরের মেয়েকে নিয়ে শিশু পার্কে এসেছেন মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ঈদ তো শিশুদের। তাই মেয়েকে নিয়ে এলাম। অনেক ভিড়। একেকটা রাইডে উঠতে প্রচুর সময় চলে যাচ্ছে। তারপরও মেয়েটা আনন্দ পাচ্ছে। তাতেই আমি খুশি।’
ঈদ উপলক্ষে বাড়তি খরচ গুণতে হয়েছে দর্শনার্থীদের। প্রবেশ মূল্য ১৫ টাকা হলেও টিকেটের মূল্য নেয়া হয়েছে ২০ টাকা। এছাড়া প্রতি রাইডের মূল্যের উপর ৫ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন।
রাজধানীর আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লা জাদুঘর, হাতিরঝিল, মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, শ্যামলীর শিশুমেলা, ধানমন্ডি লেক, সংসদ ভবন চত্বর, চন্দ্রিমা উদ্যান, বিমান বাহিনী জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারসহ রাজধানীর সব বিনোদনের স্থানগুলো ছিল লোকে লোকারণ্য। বিনোদন কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি দর্শনার্থী ছিল বিনোদনকেন্দ্রের সামনের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে। শিশুদের খেলনা থেকে শুরু করে এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হতে দেখা যায় শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, শিক্ষাসামগ্রী ও রকমারি খাবার।
ঢাকার অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র হাতিরঝিলে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হাতিরঝিলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য হাজারও মানুষের ঢল নেমেছে। এছাড়া কুড়িল ফ্লাইওভার, ৩০০ ফিট রাস্তা, জিয়া কলোনি, উত্তরা দিয়াবাড়ি বিনোদনের অংশ হিসেবে পরিণত হয়েছে।
হাতিরঝিলের ভ্রাম্যমাণ দোকানি শফিক মিয়া বলেন, ‘রোজায় তো লোকজন এদিকে তেমন আসে না। সবাই থাকে মার্কেটে। ঈদের কয়েকদিন অনেক লোক থাকে, বেচাকেনা ভালো হয়। তাই বাড়ি যাই নাই। দুই-তিন দিন ভাল বেচাকেনা করতে পারলে হাতে কিছু টাকা নিয়া বাড়ি যামু। এইডাই আমগো ঈদ।’
আগারগাঁওস্থ বিমান জাদুঘরে মিরপুর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসা শিশু নাবিল ফরহাদ বলেন, ঈদ তো আনন্দের। তাই বন্ধুরা মিলে ঘুরতে এলাম। সারাদিন ঘুরবো। খাওয়া-দাওয়া সব বাইরে করবো। অনেক মজা হবে। ঈদের দিন না ঘুরলে আর কবে ঘুরবো। এখন রাস্তাঘাট পুরাটাই ফাঁকা। তাই ঘুরতে অন্যরকম মজা।
নাবিলের আরেক বন্ধু রাফি হাসান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে গাড়ি ও রিকশাভাড়া অনেক বেশি। হিজড়ারা সমস্যা করছে। একটু পর পর এসে ঝামেলা করে। টাকা না দিলে বাজে বাজে কথা বলে। এগুলো খুব বাজে জিনিস।’
অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা জুড়ে দেখা গেছে অনেক দর্শনার্থী। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক জুড়েও ছিল সব বয়সী মানুষের বাড়তি আনাগোনা। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী ও বয়স্ক সবাই যেনো বিনোদনের খোঁজে বেরিয়ে পড়েছেন।