সাকিবের অধিনায়কত্ব যখন প্রশ্নবিদ্ধ
স্পোর্টস ডেস্ক: আফগানদের কাছে গত রাতে বাংলাদেশের হারের পর সাকিব আল হাসানের অধিনায়কত্ব নিয়ে চারদিকে প্রশ্ন উঠছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টা নিয়ে কাটাছেঁড়া হচ্ছে।প্রশ্নটা বেশি হচ্ছে বোলারদের ঠিক মতো ব্যবহার করা নিয়ে। আছে নিজের দায়িত্বহীন ব্যাটিং।পেসাররা মার খেলেও এদিন আবু জায়েদ রাহি ও আবুল হাসানের কোটা পূরণ করার চেষ্টা করেছেন সাকিব। যার সুবিধা নিয়ে আফগানরা শেষ চার ওভারে সংগ্রহ করে ৬২ রান। যা বাংলাদেশের হারের সবচেয়ে বড় কারণ।
৪ ওভারের কোটা পূরণ করা টাইগার বোলারদের মধ্যে সাকিবই কেবল মিতব্যায়ী ছিলেন। ওভারপ্রতি ৪.৭৫ গড়ে পেয়েছেন এক উইকেটও। তিনি নিজে যেখানে সুবিধা পেলেন সেখানে তার হাতে থাকা অন্য অস্ত্রগুলো কেন পুরোপুরি ব্যবহার করলেন না সেটা নিয়েই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। এক ওভার করে হাত ঘুরিয়ে মোসাদ্দেক ও মাহমুদুল্লাহ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পেসার নয়, স্পিনাররাই এই পিচে রান আটকাতে সক্ষম। যার প্রমাণ হিসেবে মোসাদ্দেক দিলেন ৩ রান এবং মাহমুদুল্লাহ দিলেন ১ রান। এই এক ওভারেই মাহমুদুল্লাহ আবার তুলে নিলেন নজিবুল্লাহ জাদরান ও মোহাম্মদ নবির উইকেট। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো এই দুইজন আর পরে বল করারই সুযোগ পাননি।
মাহমুদউল্লাহকে আবারো বোলিংয়ে না আনা নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে। সেখানে নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষেই কথা বলেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘এটা কঠিন সিদ্ধান্ত। যদি আমি তাকে আরো এক বা দুই ওভার দিতাম এবং সে কিছু ছক্কা দিত তবে আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করতেন কেন তাকে বল দিলাম? কেন নিয়মিত বোলারদের ব্যবহার করলাম না।’
ব্যাটিংয়েও অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের যথাযথ দায়িত্ব পালন করা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তামিম ইকবাল শূন্য রানে আউট হওয়ার পর তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন সাকিব। এই সময় লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য একটু ধৈর্য ধরার দরকার ছিল। কিন্তু সাকিব এসে শুরু করলেন তাড়াহুড়া। আইপিলে সাকিবের দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন কি দুর্দান্তই না খেলেছেন। দলের বিপর্যয়ে বড় শট খেলা থেকে বিরত থেকেছেন। আবার সেট হওয়ার পর চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছিটিয়েছেন। এসব সাকিব খুব কাছ থেকেই দেখেছেন। কিন্তু এর ছিটেফোটাও এদিন দেখা যায়নি সাকিবের মধ্যে। অনেকে বলতে পারেন সাকিব তো এমনই খেলে। কিন্তু দলের একজন সদস্য সাকিব আর অধিনায়ক সাকিব তো এক বিষয় নয়।
যদিও সাকিবের অধিনায়কত্ব নিয়ে যে এবারই প্রথম প্রশ্ন উঠছে তা কিন্তু নয়। এর আগে নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে বোলারদের ব্যবহার করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ইনিংসের শুরুটা তিনি করেছিলেন নিজে। যেখানে স্পিন শ্রীলঙ্কানরা ভালো খেলেন। সেখানে সাকিব করেন বোলিং ওপেন। শুধু তাই নয়, সাকিবই প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন। গুনাথিলাকাকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন সাব্বিরের হাতে। সাকিব ওই স্পেলে বল করলেন মাত্র ২ ওভার। রান দিলেন ৯টি। উইকেট ১টি। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এরপর আর বোলিংয়েই আসেননি তিনি। ইনজুরি থেকে ফেরার পর হয়তো হাতের ওপর খুব বেশি চাপ তৈরি করতে চান না বলেই তিনি আর বোলিং করলেন না। কিন্তু সাকিব সম্ভবত ভুলেই গিয়েছিলেন তার দলে বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে নেওয়া নাজমুল ইসলাম অপুর কথা। একটি ওভারও বল তাকে দিয়ে করাননি। সাকিব আস্থা রাখেন পারটাইম বোলার সৌম্য সরকারের ওপর। সৌম্য ২ ওভার বল করে দিলেন ২১ রান। যদিও ১টি উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অপুর মতো একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনারকে এক ওভারও বল না করানো ঠিক ছিল কিনা সেটা নিয়ে তখন প্রশ্ন তোলের বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীরা।