কর্মসংকটে অসহনীয় জীবন-যাপন করছে সৌদি প্রবাসীরা
জীবিকা নির্বাহের জন্য বহু প্রবাসী বাংলাদেশি চাকরির প্রলোভনে দালালের খপ্পরে পড়ে সৌদি আরব গিয়ে ফুটপাতে হকার ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন বহু প্রবাসী বাংলাদেশি। এ অবস্থায় প্রবাসীদের ফুটপাত ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ায় ক্ষুন্ন হচ্ছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও। সৌদি আইন লঙ্ঘনের অপরাধে প্রতিনিয়ত ধরপাকড়ের শিকার হয়ে জেলে যেতে হচ্ছে তাদের। তবুও নিরুপায় তারা।
এছাড়া, দেশটির বিভিন্ন কোম্পানিতে শতভাগ সৌদি নাগরিকের কর্মসংস্থানের প্রভাবেও কাজ না পেয়ে বাংলাদেশিরা শুরু করছেন ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসা। দেশটির আইনে ফুটপাতে যে কোনো ব্যবসা নিষিদ্ধ হওয়ায়, প্রতিনিয়ত ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। এতে গুণতে হচ্ছে জেল-জরিমানা।
দালালের প্রলোভনে ভুয়া চুক্তিতে সৌদি আরবে আসেন টাঙ্গাইলের আব্দুল হাকিম। সৌদি আসার পর বিমানবন্দর থেকেই শুরু হয় তার প্রবাস জীবনের অনিশ্চিত পথচলা। যে এজেন্সির মাধ্যমে এসেছিলেন যোগাযোগ করতে পারেননি তাদের সঙ্গে। কর্মস্থল, বাসস্থান এবং বৈধতা- কোনটাই না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই শুরু করেছেন ফুটপাতে ক্ষুদ্র ব্যবসা।
এক প্রবাসী বলছেন, ফুটপাতে ব্যবসা করি। এখানেও পুলিশ ও বলদিয়ার লোকজন এসে আমাদের ধাওয়া করে, তখন পালিয়ে যাই। এইভাবে দিন চলছে।
আরও : কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকে মারধর
অন্য এক প্রবাসীরা বলেছেন, আমরা সৌদি আরব এসে কাজ পাচ্ছি না। তবে, এখন ফুটপাতে কাজ করে কোন রকমভাবে চলতেছি। তার মধ্যে বলদিয়া এসে আমাদের সব কিছু নিয়ে যায়।
ফুটপাতে ব্যবসা করা প্রবাসীদের জীবনের গল্পগুলো এমনই। কেউ কোম্পানিতে কাজ করে মাসের পর মাস বেতন পান না। কেউ বা চুক্তি অনুযায়ী কাজ না পেয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে হয়েছেন হকার।
নিঃস্ব হওয়া এক প্রবাসী বলেছেন, এখানে আমার নিজস্ব দোকান ছিল। সেই দোকান অন্য মালিক নিয়ে গিয়ে উল্টো আমার নামে মামলা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তা ব্যবসায় করতেছি।
গত ছয় বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালের পহেলা ফেব্র“য়ারি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সৌদি সরকার। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয় দেশটিতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশই যারা বিভিন্নভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। সূত্র: সময় টিভি