শুক্রবার, ২৫শে মে, ২০১৮ ইং ১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি ৩০টি গ্রামের মানুষ

আখাউড়া প্রতিনিধি : টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের ফসলি জমি, পুকুরসহ এলাকার রাস্তাঘাট।

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়তে থাকে। এদিকে অতিবৃষ্টি ও ওপারের পাহাড়ি ঢলের পানিতে আখাউড়া স্থলবন্দর কাস্টমস এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কাস্টমস কার্যলয় হয়ে ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পানিতে ভিজে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে চলা কালন্দি খালটি দিয়ে ভারতীয় ঢলের পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এতে করে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আখাউড়া-আগরতলা সড়কের দুই পাশের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আব্দুল্লাহপুর ও বঙ্গেরচর গ্রামের জমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আরও : ইফতারে সুস্বাদু বুন্দিয়া রায়তা

অন্যদিকে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে কর্নেল বাজার এলাকা দিয়ে ত্রিপুরা পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার মনিয়ন্দ, মোগড়া ও ধরখার ইউনিয়নের ভাটামাথা, চন্দ্রপুর, ধরখার গ্রাম, ভিনাউটি, ভবানীপুর, রুটি, খারকুট, মিনারকুট, কুড়িবিল, পদ্মবিল, টনকি, ইটনা, কর্নেল বাজার, খলাপাড়া, কুসুমবাড়ি, আওরারচর, উমেদপুর, সেনারবাদি, ছয়ঘরিয়া, বাউতলা, দরুইন, বচিয়ারা, বাগানবাড়ি, নোয়াপাড়া, নিলাখাত, টানুয়াপাড়া, ধাতুর পহেলা, চরনারায়নপুর ও আদমপুরসহ আখাউড়া পৌরশহরের তারাগন গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে কৃষকের পাকা ধানের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যায়। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এছাড়াও তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট।

উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন,ত্রিপুরা পাহাড়ি ঢলের পানিতে তার ইউনিয়নের ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। নিচু এলাকায় সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। প্লাবিত হওয়ায় পুকুরে মাছ ভেসে গিয়ে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন জানান, কালন্দি খাল দিয়ে আসা পানি সামনের দিকে দ্রুত সরতে পারছে না। যে কারণে দক্ষিণ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জুয়েল রানা বলেন, প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সীমান্তবর্তী আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকের ধানের জমি তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শামছুজ্জামান জানান, পানি ঢুকে পড়া গ্রামে যাদের বসতঘর ঝুঁকিপূর্ণ (মাটিরঘর) তাদেরকে সরিয়ে আনা হচ্ছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে ত্রাণ প্রক্রিয়ার কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। তিনি প্লাবিত বন্যাদূর্গত এলাকা পরিদর্শনে আছেন বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email