রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদ একমত
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একমত। সেই অনুযায়ী তারা কাজ করছে। এরই প্রতিফলন হচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চপর্যায়ের একটি দল বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এই তথ্য জানিয়েছেন।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদ একমত। আগে তো এটি নিয়ে কথাই বলা যেতো না। এখন তারা সবাই মিলে আসছে। এটি একটি বিরাট ফরোয়ার্ড মুভমেন্ট।’
প্রসঙ্গত, ১৫-সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের ১০ জন স্থায়ী প্রতিনিধি ও পাঁচ জন উপস্থায়ী প্রতিনিধিসহ ৩০ জনের একটি দল প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করবে।
এই প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘অস্থায়ী নয় সদস্যের স্থায়ী প্রতিনিধি ও যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফরে আসবেন।’
নিরাপত্তা পরিষদের অবস্থান সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে, এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রথম অবস্থা থেকে পরিবর্তন কিছুটা এসেছে। আগে যেমন মনে হয়েছে, তারা আরও বেশি গঠনমূলক হতে পারতো বা কিছুটা দূরত্ব রেখে বক্তব্য দিচ্ছে কিন্তু এখন তারা অনেক বেশি গঠনমূলক। বিষয়টি কাছ থেকে দেখছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে চীন এখন অনেক বেশি গঠনমূলক। চীনের প্রথম দিকের বক্তব্য যে রকম ছিল, সেই অবস্থান থেকে তারা সরে এসেছে।’
নিরাপত্তা পরিষদের এই সফরের জন্য মিয়ানমার যে রাজি হয়েছে, এখানে বেইজিংয়ের প্রভাবের প্রতিফলন দেখা যায় বলে মনে করেন রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে কী আশা করে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আশা হচ্ছে, তারা সরেজমিনে দেখবে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলবে, তারা কিভাবে ফেরত যেতে চায়, সেটি বুঝে নিয়ে তারপর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে তাদের সুবিধা হবে, এ বিষয়গুলো মিয়ানমারের অবস্থান জানার জন্য। এরপর নিরাপত্তা পরিষদ কোনও সিদ্ধান্ত নিলে এর আলোকে তারা নেবে।’
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে কী জানাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা কিভাবে নিরাপদে ফেরত যেতে পারে, তাদের টেকসই জীবনযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে, এই বিষয়টির ওপর জোর দেব। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বা অন্য বিষয়গুলো মিয়ানমার সরকারের বিষয়। আমরা চাইবো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যেন সুন্দরভাবে শুরু হয়, টেকসইভাবে হয়। এই লোকগুলো যেন বারবার ফেরত না আসে।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসন-প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা পরিষদের দিকনির্দেশনার দরকার আছে। মূল কাজটি মাঠপর্যায়ে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাসহ অন্যরা করবে কিন্তু দিকনির্দেশনা, সুপারভিশন ও কাস্টডিয়াশিপ এগুলো যদি মিয়ানমারের কাছ থেকে আসে, তবে মিয়ানমারের পক্ষে গড়িমসি করা অসুবিধা হবে।’
বাংলা ট্রিবিউন