সোমবার, ৪ঠা জুন, ২০১৮ ইং ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতেও কাটেনি সড়কের বেহালদশা

news-image

রিয়াসাদ আজিম : স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও সরাইল উপজেলা সদরের সাথে শাহাজাদাপুরের পাকা সড়ক নির্মিত হয়নি। এতে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছেন তিনটি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জনদূর্ভুগ বেরেছে কয়েক গুণ। স্থানিয়দের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ।

শাহাজাদাপুর ইউননিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, গত অাট বছর অাগে (২০১০ সালে) স্থানীয় সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধার দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদে সড়কটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির দীর্ঘ অাট বছর পার হলেও সড়কটির বেহালদশা কাটেনি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় মলাইশ সেতু থেকে শাহাজাদাপুর বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার অংশ কর্দমাক্ত হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলেন, একদিন বৃষ্টি হলে তিন দিনেরও বেশি সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে এই সড়কে।

এলাকার ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ি, কৃষকসহ যানবাহন চালকদের অভিযোগ, গত অাট বছরে কয়েক দফা মাপজোঁক, মাটি পরীক্ষা আর স্থানীয় সংসদ সদস্যহ কর্তাব্যক্তিদের পরিদর্শন ও আশার বাণী ছাড়া দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখতে পায়নি তারা।

শাহাজাদাপুর গ্রামের জুম্মান আনসারীসহ কয়েকজন যুবক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এই যুগে এমন বেহাল দশার সড়ক বাংলাদেশের আর কোথাও আছে বলে অামাদের মনে হয় না। সড়কটি নির্মাণের দাবিতে আমরা একাধিকবার মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছি। কিন্তু সড়কটি নির্মান করা হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর অামরা সপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু অাট বছর গত হয়ে গেলেও সড়কের দৃশ্যপট বদলায়নি।

একই গ্রামের বাসিন্দা, কলেজ ছাত্রী গীতা রাণী দাস বলেন, বৃষ্টির এই মৌসুমে দুই কিলোমিটার কাদামাটির পথ পায়ে হেঁটে কলেজে যেতে ইচ্ছা হয় না। তাছাড়া সিএনজি অটোরিকশার ভাড়াও গুণতে হয় অতিরিক্ত।

গ্রামের ষাটোর্ধ বৃদ্ধ অমল চন্দ্র দাস বলেন, মাত্র দুই কিলোমিটার নাজুক সড়কের কারণে এই এলাকার হাজারো মানুষ শিক্ষার দিক থেকে মারাত্মক পিছিয়ে রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা সদরে জরুরি ভিত্তিতে কোন রোগী নিয়ে যেতেও তাদের হিমশিম খেতে হয়। তাছাড়া পরিবহন ব্যয় বেশি হয় বলে কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পেরে বছরের পর বছর ধরে অার্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সড়কটিতে প্রায়শ’ চলাচলকারি সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জাবেদ মিয়া বলেন, যাত্রী লোড করে এ সড়কে গাড়ি চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রায়ই অটোরিকশা উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। তাছাড়া ঘন ঘন গাড়ির যন্ত্রাংশও নষ্ট হয়।

জানতে চাইলে শাহাজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, সড়কটি নির্মাণে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সব রকমের চেষ্টা করা হচ্ছে। কোন কিছুতেই অামরা সুফল পাচ্ছি না। এলাকাবাসীর পক্ষে আমার আবেদন দ্রুততম সময়ে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সড়কটি নির্মান করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি যেন বাস্তবায়ন করে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

এদিকে এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) সরাইল উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদুল হক বলেন, শাহাজাদাপুর সড়ক নির্মাণ প্রল্পটি ঢাকায় প্রক্রিয়াধীন আছে। নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হতে আরও অন্তত ছয় মাস সময় লাগতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email