অর্থনৈতিক অবস্থানগত তালিকায় বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৪২তম দেশ
ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ডের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী অর্থনৈতিক অবস্থানগত তালিকায় বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৪২তম স্থানে রয়েছে। চলতি বছর বাংলাদেশ ভেনেজুয়েলাকে পেছনে ফেলে বিশ্বের ৪২তম দেশে উন্নীত হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ. হ. ম. মুস্তফা কামাল আজ সংসদে ৩০০ বিধিতে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘আইএমএফ’র তথ্য অনুযায়ী বিগত ৯ বছরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অবস্থানগত তালিকায় বিশ্বের ১৫টি দেশকে পেছনে ফেলে ৪৩তম অবস্থানে পৌঁছেছে। ২০১০ সালে অর্থনৈতিক অবস্থানগত তালিকায় বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের ৫৮তম দেশ। বিগত ৯ বছরে অর্থাৎ ২০১৭ সালে বিশ্বের ১৫টি দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ তার অবস্থান ৫৮ থেকে ৪৩ এ উন্নীত করেছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ অর্জন।’
তিনি বলেন, ‘স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে বাংলাদেশ উন্নত দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সামনে আছে আরো ২২টি বছর, এই সময়ে আমাদেরকে আরো ২২টি সিঁড়ি ভাঙতে হবে। এই সময়ের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশ একটি মর্যাদাশীল, উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে উত্তীর্ণ হবে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর অর্থনীতি নিয়ে যেসব বিশ্ব সংস্থা পর্যালোচনা বা মূল্যায়ন করে থাকেন তাদের কারো বিবেচনায় মধ্যম আয়ের দেশ বলে কিছু নেই। অর্থনৈতিক বিবেচনায় পৃথিবীর কোনো দেশ গরীব বা ধনী তা মূল্যায়ন করে দুটি বিশ্ব সংস্থা এদের একটি হলো জাতিসংঘ এবং অপরটি হলো বিশ্বব্যাংক। জাতিসংঘ তাদের আওতাভুক্ত ১৯৩টি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মূল্যায়ন করে থাকেন। তাদের মূল্যায়নে সবচেয়ে নীচের দিকে থাকে যে দেশ তাকে বলা হয় হতদরিদ্র দেশ, এর উপরে যে দেশের অবস্থান তারা স্বল্পোন্নত দেশ, এর পরে অবস্থান হলো উন্নয়নশীল দেশ এবং সর্বশেষ স্তরটি হলো উন্নত দেশ।
তিনি বলেন, ‘অতিসম্প্রতি জাতির পিতার জন্মদিনে ১৭ মার্চে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি আমাদের জাতির জন্য একটি গৌরবোজ্জল বিষয়। এই অর্জন আমাদের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এই অর্জনটি মধ্যম আয়ের দেশের সমান বলে আমরা মনে করি। যে স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে দেখিয়েছিলেন। ২০২১ সালের অনেক আগেই বাংলাদেশ তার এই লক্ষ্যে পৌঁছেছে। এবার আমাদের টার্গেট ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উত্তীর্ণ হওয়া।’
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘জাতিসংঘ ছাড়াও পৃথিবীর দেশসমূহের অর্থনৈতিক অবস্থান মূল্যায়ন করে বিশ্বব্যাংক। তাদের হিসাব অনুযায়ী অর্থনৈতিক শ্রেনীকরণের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে নিম্ন আয়ের দেশ, এরপর নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ, পরবর্তী স্তর হচ্ছে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ এবং সর্বশেষ অবস্থান উচ্চ আয়ের দেশ বা উন্নত দেশ যেখানে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে আংলাদেশকে দেখতে চাই।’
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছর অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে ৭.৬৫ শতাংশ। এটি একটি অসাধারণ অর্জন। পৃথিবীতে পর পর তিনটি বছর ৭ শতাংশের উপর প্রবৃদ্ধি অর্জন করার সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে সারাবিশ্বে মাত্র দুইটি দেশ, এরমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। দেশের মানুষ এখন বিশ্বাস করে বাংলাদেশ এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এ বছরই নয় বিগত ৯ বছর ধরে আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে।