বৃহস্পতিবার, ৫ই এপ্রিল, ২০১৮ ইং ২২শে চৈত্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

আমার ভুলগুলো যাতে কেউ অনুসরণ না করে : মাশরাফি

স্পোর্টষ ডেস্ক : ‘ক্রিকেট যেহেতু খেলেছি ক্রিকেটকে দেওয়ার অনেক কিছু আছে। প্রায় ১৭-১৮ বছর ক্রিকেট খেলে অনেক কিছু পেয়েছি ক্রিকেটের সাথে থাকতে পারা আনন্দের ব্যাপার। তবে ভবিষ্যতের কথা বলা কঠিন কী হবে, তবে অবশ্যই আমি চাই মানুষকে সহযোগিতা করতে। বিবিসি’র কাছে এসব কথাই বলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

অবসরের পর পরিকল্পনা কী ক্রিকেট কোচিং না রাজনীতি? এ প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, তবে এখনই অবশ্য অবসর নিয়ে ভাবছেন না মাশরাফি। জাতীয় দলের হয়ে এখন টেস্ট বা টি-টোয়েন্টি না খেললেও ওয়ানডেতে তিনি বেশ ভালো ফর্মেই আছেন।

চলতি মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মাশরাফি বিন মর্তুজা। এবারে আবাহনী দলের হয়ে খেলছেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবি না। বর্তমানে বিশ্বাস করি। হ্যাঁ, একটা সময় তো আসবেই যখন ভবিষ্যত নিয়ে কিছু মনে হবে। তখনকারটা তখন ভাববো’।

২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই পেস বোলারের ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ইনজুরি বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। শুধু হাঁটুতেই ৭ বার অস্ত্রোপচার করিয়েছেন মাশরাফি।

ক্রিকেটারের জীবনটা কেমন উপভোগ করেছেন মাশরাফি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটটা আমার সাথে মানিয়ে গেছে। দশটা কাজ করা যায় না, মনের মতো কাজ একটাই থাকে। ক্রিকেটটাই আমার জন্য, এজন্যেই পেরেছি। এজন্যেই অপারেশন-ইনজুরি এসব কষ্ট কাটিয়ে উঠতে পেরেছি’।

মাশরাফির বাড়ি নড়াইল জেলায়। ক্রিকেট খেলার ফাঁকে প্রায়ই যান নড়াইলে। নড়াইলের সন্তান মাশরাফির সাথে দেখা করতে প্রতিবারই তাঁর বাড়ির আঙ্গিনায় ভিড় জমান অনেক চেনা-অচেনা মানুষ।

মাশরাফির কাছে বিবিসি বাংলা প্রশ্ন রাখে কীভাবে তিনি সামাল দেন এই চাপ? বলেন, ‘কখনো কখনো একের পর এক মানুষ আসতেই থাকে। কখনো কখনো আমি দুই বা তিনদিনের বেশি ছুটি পাই না। আমি ছোটবেলা থেকে নানা-নানীর কাছে বড় হয়েছি। যখন বাবা-মার সাথে যাই, পারিবারিক একটা সময় কাটাতে চাই। তাই কখনো কখনো একটু সমস্যা হয়ই। তাই সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু তারা অনেক দূর থেকে অনেকে কষ্ট করে আসে। একটা সময় দিতেই হয় তাই”।

শৈশবে নড়াইলের চিত্রা নদীতে দাপিয়ে সময় কেটেছে মাশরাফির, মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়তি উৎসাহ কাজ করে তাঁর মধ্যে। এখনো ঢাকায় মোটরসাইকেলেই চলাফেরা করেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক।

ক্রিকেট ক্যারিয়ারের বাইরেও মাশরাফির ডানপিটে স্বভাব এবং তার নেতৃত্ব মিলিয়ে ভক্তদের অনেকের কাছে ক্রিকেটের বাইরেও একটা ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। বিবিসি বাংলাকে অবশ্য তিনি বলছেন, জনপ্রিয় হবার আগের জীবনটাই তিনি বেশি উপভোগ করতেন। এই জীবনে অনেক দায়বদ্ধতা রয়েছে।

ভক্তদের অনেকে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে আদর্শ হিসেবে দেখেন। মাশরাফির মতে এটা একটা বাড়তি চাপ, তবে তিনি মানুষের ভালবাসাকেই বড় করে দেখেন। মাশরাফি বলেন, এটার ভেতরে একটা আনন্দ আছে। ভালো দিক হচ্ছে চাইলেও অনুচিত কিছু করা হয় না, একটা নিয়ন্ত্রণ আসে নিজের মাঝে।

মানুষ যখন আমাকে অনুসরণ বা অনুকরণ করে তখন আসলেই ভাল লাগে, যোগ করেন প্রিয় তারকা।

আরো বলেন, ‘আমার দ্বারা আগে, এখন বা ভবিষ্যতে অনেক ভুলই হতে পারে। সেই ভুলগুলো যাতে কেউ অনুসরণ না করে এটাই চাইবো’।

 

Print Friendly, PDF & Email