g ‘রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে’ | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শুক্রবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ৭ই আশ্বিন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

‘রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে’

AmaderBrahmanbaria.COM
সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
news-image

---

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তায় বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। এজন্য তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে দেশটির উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আশ্রয় প্রার্থী অসহায় রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘নাগরিক সমাজ’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানানো হয়। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের হত্যা-নির্যাতনের প্রতিবাদ ও তাদের মানবাধিকার রক্ষার দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

নাগরিক সমাজের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতা করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত বক্তব্য রাখেন। আরও উপস্থিত ছিলেন, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেব নাথ ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুর হুদা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত না থাকলেও নাগরিক সমাজের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অজয় রায়, অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারম্নজ্জামান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, পরিবেশ আইনবীজীদের সংগঠন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অ্যাকশন এইডের ফারাহ কবির প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এতে বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। তারপরও তাদের মানবিক মর্যাদার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত জাতিগত হত্যাযজ্ঞ বন্ধ এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়নে দেশটিকে বাধ্য করতে হবে। এজন্য ভারত, চীন, রাশিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বড় ও ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করতে হবে বাংলাদেশকে। এসব দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

অং সান সুচির সমালোচনা করে সুলতানা কামাল বলেন, তার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক নির্যাতন ও হত্যার কোন স্বীকৃতি নেই। রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়া বা আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি অনুযায়ী তাদের নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস নেই।

খুশী কবির বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরম্নদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে নারীদের পরিস্থিতি বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে।

রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমারের নির্যাতন বন্ধ এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে ভারত, চীনসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সরকারগুলোকে বিশেষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান অধ্যাপক এম এম আকাশ।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে ১১ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের সামর্থ্য অনুযায়ী সব পদক্ষেপ নেয়া, সরকারে পাশাপাশি এনজিও, আন্তর্জাতিক সংস্থা, জাতিসংঘসহ সবাইকে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনকারী মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশ সদস্যদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি তুলতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দেশের ভেতরে যাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।

এ জাতীয় আরও খবর