ট্রাম্পের সহচর ২৮ বছরের এই তরুণী কে?
---
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :অন্তবর্তীকালীন গণমাধ্যম পরিচালক হিসেবে ২৮ বছর বয়সী সাবেক এক মডেলকে নিজের প্রশাসনে নিয়োগ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই পদ থেকে অ্যান্থনি স্কারামুক্কিকে পদচ্যুত করার ১০ দিনের মাথায় হোপ হিকসকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বরাবরই প্রশাসনের লোকদের নিজের আয়ত্বে রাখতে চেয়েছেন।
নতুন করে নিয়োগ পাওয়া হোপের কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। তবে গত পাঁচ বছর ধরে ট্রাম্প পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার। এরইমধ্যে প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন এই তরুণী। ট্রাম্পের কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া ব্যক্তিদেরও একজন তিনি। বছরে পান ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
কিন্তু কোনো ধরনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাবিহীন এমন একজন ব্যক্তিকে কেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ দেয়া হলো? মূলত একজন জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন হোপ। তখন ট্রাম্প-কন্যা ইভাংকার কোম্পানি ছিল তার অন্যতম গ্রাহক। কাজের অংশ হিসেবে ইভাংকার ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানের হয়ে বেশকিছু অনুষ্ঠানে মডেলিংও করেছেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ কন্যার সঙ্গে কাজ করার সময়ই নজরে পড়েছিলেন হোপ। ২০১৪ সালের অক্টোবরে নিজের রিয়েল এস্টেট কোম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন ট্রাম্প। কাজের ক্ষেত্রে হোপ ‘অসাধারণ’- এমন মন্তব্য ট্রাম্পের।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে ট্রাম্পের একটি রাজনৈতিক সফরে সঙ্গী হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রথম রাজনীতির মাঠ চিনেন এই তরুণী। সেটিই ছিল হওয়ার জন্য বর্তমান এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম কোনো নির্বাচনী প্রচারণা। তখন ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট চালাতে সহায়তা করা, তার কথা লিখে রাখা এবং সময়মতো টুইট করার জন্য অন্যদের আদেশ দেয়া- এসবই ছিল হোপের কাজ।
নির্বাচনী প্রচারণা যতই বাড়ছিল, হোপের কাজও বাড়ছিল। ট্রাম্পের রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে ফিরে যাওয়া বা তার ফুলটাইম প্রেস সেক্রেটারি হয়ে থাকা- এই দুইয়ের মধ্যে একটি বেছে নিতে হয়েছিল তাকে। তিনি রিয়েল এস্টেটে ফিরে গেলেন। পরে ট্রাম্প তাকে তার রাজনৈতিক টিমে থাকার অনুরোধ করেন। এরপর থেকে হোপ ছিলেন নির্বাচনের কাজে।
তার সাক্ষাৎকার দেয়ার ঘটনা বিরল। যদিও সাংবাদিকদের সঙ্গে ট্রাম্পের প্রতিটি সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানেই থাকতেন তিনি। ট্রাম্প টিমে কাজ শুরুর পরপরই নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করে দেন হোপ। প্রাইভেট করে ফেলেন ইনস্টাগ্রামটিও। অবশ্য সব সময়ই প্রেসিডেন্টের আস্থাভাজন ছিলেন এই তরুণী। বিভিন্ন সময় ট্রাম্প টিমে পরিবর্তন দেখা গেলেও হোপ নিজের জায়গাতেই ছিলেন। বর্তমানে ট্রাম্পের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন উপদেষ্টা তিনি।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর হোপ হিকসকে নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ করেন। তাকে করা হয় হোয়াইট হাউসের কৌশলগত যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক। তিনি কখনো প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করতে চাননি। শুধু তার কাজে সহযোগী হয়ে থেকেছেন।
মার্কিন গণমাধ্যম পলিটিকোর এক নিবন্ধে বলা হয়, ট্রাম্প পরিবারের একজন সত্যিকার বিশ্বস্ত ব্যক্তি হোপ। ইভাংকা ট্রাম্প এবং জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসবেও অংশ নিয়েছেন তিনি। চলতি বছরের মে মাসে ট্রাম্পের সঙ্গে গিয়ে যারা পোপের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, সেই হাতেগানো কয়েকজনের মধ্যে হোপ একজন।