ছয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঋণ পুনর্গঠন ও বিশেষ সুবিধায় ঋণ পুনঃতফসিলের পরও খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। প্রতিমাসেই অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাস শেষে (জানুয়ারি-জুন) ব্যাংকখাতে শ্রেণীকৃত ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ।
২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। ছয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে প্রথম প্রান্তিক জানুয়ারি-মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। যা ওই সময়ে বিতরণ হওয়া ঋণের ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। তিন মাসে এই ঋণের পরিমাণ ৭৩৯ কোটি টাকা বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী কৌশলে ব্যাংকের অর্থ হাতিয়ে নেবেন, যা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। এর লাগাম টানতে হবে। তা না হলে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতসহ দেশের গোটা অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত্র হবে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরছে না। জ্বালানি সংকটে উদ্যোক্তারা নতুন করে বিনিয়োগে আসছেন না। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেকেই শিল্পকারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন ব্যাংকের ঋণ বিতরণ বাড়ছে না, অন্যদিকে আগে বিতরণ হওয়া ঋণের টাকাও ফেরত পাচ্ছে না ব্যাংক। আর বিশেষ সুবিধায় ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা কিছুটা কাজে লাগলেও সামগ্রিকভাবে তা খেলাপি ঋণ কমাতে পারছে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ঋণ শ্রেণিকরণের (খেলাপি) তিনটি পর্যায় রয়েছে। তা হলো নিম্নমান, সন্দেহজনক এবং মন্দ বা ক্ষতি। এই তিনটি পর্যায় বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকগুলোকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ করতে হয়। ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ নিম্নমানের ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ প্রভিশন, ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে হলে সন্দেহজনক ঋণ, যার বিপরীতে ৫০ শতাংশ প্রভিশন এবং ৯ মাসের বেশি হলে তাকে মন্দ বা ক্ষতি মানে বিবেচিত হয়, এর বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন রাখতে হয়।