কবিগুরুর ৭৬তম প্রয়াণ বার্ষিকী আজ
---
আশি বছরের জীবনসাধনায় অমরতার শাশ্বত বার্তায় যিনি তুলে ধরেছিলেন চিরকালীন মানবসত্যকে। যার হাত ধরেই নতুন রূপ লাভ করে বাংলা সাহিত্য। ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, ছোটগল্পকার ও ভাষাবিদ। তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
২২শে শ্রাবণ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৬তম প্রয়াণ বার্ষিকী। বাংলা ১৩৪৮ সালে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে শ্রাবণের বাদলঝরা এই দিনেই চলে যান কবি। বিশ্বাস করতেন বিশ্বমানবতায়। মানুষের মুক্তিই ছিল তাঁর দর্শন।
তার সুর আর বাণী পেন্ডুলামের মত দোলায় বাঙালির অন্তর। সীমাহীন প্রেম, প্রকৃতি, প্রার্থনা, জীবন এবং জগতের সকল অনুভূতি মিশেছে যেন তার গানে। তার সংগীত শ্রোতাকে ভাসায়, অজানা অনুভূতির সন্ধান দেয়। এই সংগীতেই সবচেয়ে আপন করে পাওয়া যায় তাকে।
বুকের গহীন কোণে পেতে রাখা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর আসন। সেই হৃদিপদ্মাসনে যে থাকে। যার সঙ্গে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে বিনিকথা। তার উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন অসংখ্য গান। অন্তরভুক এই গান শুনে আজও সমানতালে নেচে ওঠে বাঙালির অন্তর। কখনো বা সেই অন্তরেই সৃষ্টি হয় মধুরমোহন সংকট। তাই বাঙালি মাত্রই রবীন্দ্র গানে মুগ্ধ।
তবে, শূন্যতা, সংশয়, অতৃপ্তি প্রেম আর প্রেমহীনতার কথা শুধু নয়। রবির গানে নানাভাবে ব্যক্ত হয়েছে, প্রকৃতি,দেশপ্রেম, প্রার্থনাসহ বিশ্বচরাচরের যেন সমস্ত অনুভূতি।
প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য পান নোবেল সাহিত্য পুরস্কার। নাচ, গান, পাঠাভিনয়, আবৃত্তি ও আলোচনার মধ্য দিয়ে শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি ও ছায়ানটসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান আজ কবিগুরুর ৭৬তম প্রয়াণবার্ষিকী পালন করবে। বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবসে সারা দেশে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
সময়ের আবর্তে বোধ পাল্টায়। পাল্টে যায় রুচিও। কাল অগ্রসর হচ্ছে বলে রবীন্দ্রসংগীতের বিপত্তি নয়, অগ্রসর হচ্ছে না বলেই বিপত্তি। রবীন্দ্র সংগীত রয়ে যাবে বিশ্বাস, পরিশীলন ও মানবতার অনিরুদ্ধ উৎস হয়ে।