‘অলঙ্কার কেন পাবো না?’
---
নিউজ ডেস্ক : সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কার বুঝে পাওয়ার অপেক্ষায় এই গ্রাহক‘ভাগ্নির বিয়ের জন্য সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কারের অর্ডার দিয়েছিলাম। গত মাসে অলঙ্কার বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাইনি। আপন জুয়েলার্সের সমস্যা থাকলে আমরা কেন ভুক্তোভোগী হবো? কষ্টের টাকা দিয়ে অলঙ্কার বানাতে দিয়েছি। আমাদের কাছে আর মাত্র ২০ হাজার টাকা পাবে। সাত ভরি স্বর্ণতো ২০ হাজার টাকার জন্য আটকে রাখতে পারে না। আমাদের কি দোষ! আমাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে কেন? অলঙ্কার কেন পাবো না?’ আপন জুয়েলার্সের সীমান্ত স্কয়ার শাখায় পারভীন নামের এক গ্রাহক এসব কথা বলেন।
পারভীন থাকেন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায়। শুল্ক গোয়েন্দারা যেদিন স্বর্ণ নেওয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন সেদিন স্বর্ণ নিতে এসছিলেন কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তখন এসেছি। তারা বলছে নেক্সট ডেটে আসেন। কিন্তু এরপর আর কোনও ডেট দেওয়া হয়নি। আপন জুয়েলার্সেরর কর্মকর্তারা বারবার স্বর্ণ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলছে। তবে কীভাবে পাবো তা তো জানি না।’
আপন জুয়েলার্সে নিজেদের স্বর্ণালঙ্কার বুঝে পাওয়ায় অপেক্ষায় গ্রাহকরা
উল্লেখ্য বৈধ কাগজ-পত্র ছাড়াই আপন জুয়েলার্সে থাকা সাড়ে ১৩ মণ সোনা জব্দের প্রক্রিয়া শুরু করেছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। রাজধানীতে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শাখায় রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে একযোগে এ কাজ শুরু হয়। আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ এসব সোনার কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এগুলো জব্দ করা হচ্ছে। তবে কোনও গ্রাহক যদি সোনা বা সোনার অলঙ্কার জমা রাখার কাগজপত্র দেখাতে পারেন, তাদের গচ্ছিত সম্পদ ফেরত দেওয়া হবে বলে শুল্ক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বেলা ১২টার সীমান্ত স্কয়ারে আপন জুয়েলার্সের শাখায় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় নিশাত সালসাবিল রোজা নামের আরেক গ্রাহকের। তিনি বলেন, ‘এই জুয়েলার্সের কাছে টাকা পাবো। তাদের কাছে সাড়ে ৫ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করছি। একলাখ টাকা নিয়েছি। এখনও আরও এক লাখ টাকা পাবো।’
শুল্ক গোয়েন্দার উপ-পরিচালক (ডিডি) জাকির হোসেনের নেতৃত্বে সীমান্ত স্কয়ারের আপন জুয়েলার্স শাখার স্বর্ণ জব্দের কাজ চলে। তিনি বলেন, ‘আমরা কাস্টম হাউজের গোডাউন কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দেবো। আইন অনুযায়ী প্রথমে তিনি বুঝে নেবেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে বুঝিয়ে দেবেন। আমরা বর্তমানে জব্দের তালিকা করছি।’
আপন জুয়েলার্সের সোনা জব্দ
গত ১৪ ও ১৫ মে শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকের ৫টি শোরুমে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ১৩ মণ সোনা ও ৪২৭ গ্রাম হীরা সাময়িকভাবে আটক করে। তবে আপন জুয়েলার্স বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় এই সোনা আনুষ্ঠানিকভাবে জব্দ করা হচ্ছে।
তবে আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষের দেওয়া ১৮২ জনের তালিকার মধ্যে ৮৫ জন প্রকৃত গ্রাহককে মেরামতের জন্য জমা রাখা প্রায় ২.৩ কেজি স্বর্ণালঙ্কার অক্ষত অবস্থায় ফেরত দেওয়া হয়েছে।বাংলা ট্রিবিউন