এবার সূর্য জয়ের যাত্রা!

---
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মহাবিশ্বের অনেক গ্রহে একাধিক সফল অভিযানের পর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবার সূর্যের বায়ুমণ্ডলে তাদের পরবর্তী মিশন পাঠাতে যাচ্ছে।
‘সৌর প্রোব প্লাস’ নামের নতুন এই মিশনটিতে ২০১৮ সালের গ্রীষ্মে পৃথিবী থেকে একটি মহাকাশযান উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে নাসা, যা সূর্যের জ্বলন্ত-উত্তপ্ত পৃষ্ঠের চার মিলিয়ন মাইলের মধ্যে একটি কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করবে।
নতুন এই মিশনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত বিজ্ঞানীরা আগামী ৩১ মে বুধবার সকাল ১১টায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে, যেখানে মিশনটির বিস্তারিত প্রক্রিয়া তুলে ধরা হবে এবং এতে নক্ষত্র ও স্পেস আবহাওয়ার বিষয়ে একটি প্রশ্নত্তোর পর্বও থাকবে।
এর আগে বছরের শুরুতে নাসা ঘোষণা করে যে, তারা প্রথমবারের মতো সূর্যের বায়ুমণ্ডলে একটি রোবটযান পাঠাতে যাচ্ছে, যা মানবসভ্যতার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হতে পারে এমন সব বিপজ্জনক সৌর কার্যকলাপগুলো বুঝতে সাহায্য করবে।
মহাকাশযানটি আগামী বছর সূর্যপৃষ্ঠের ৪ মিলিয়ন মাইলের মধ্যে প্রবেশ করবে এবং চরম তাপ ও বিকিরণের সম্মুখীন হবে। এটি আগের যেকোনো মহাকাশযানের তুলনায় সূর্যের পৃষ্ঠের সাত গুণ বেশি কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবে।
নাসার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই নতুন মিশনের পর্যবেক্ষণগুলো নক্ষত্র কীভাবে কাজ করে বুঝতে সাহায্য করবে এবং মহাকাশ আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়ার মানুষের ক্ষমতাকে আরো উন্নত করবে।
নাসা জানিয়েছে, মিশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার এই ইভেন্ট শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম একহার্ড রিসার্চ সেন্টার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এবং নাসা টিভিতে লাইভ করা হবে।
এই মিশন সম্পর্কে মেরিল্যান্ডের গ্রিনবেট্টের গর্ডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের নাসার গবেষণাবিজ্ঞানী এরিসি ক্রিশ্চিন বলেন, ‘এটি হতে যাচ্ছে সূর্যের দিকে যাত্রার ক্ষেত্রে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। আমরা হয়তো সূর্যপৃষ্ঠে যেতে পারব না, কিন্তু তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য মিশনটি যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।’
মিশন সফল করতে মহাকাশযানটি ২৫০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (১,৩৭৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রা প্রতিরোধ করে তৈরি করা হয়েছে। এটিতে একটি ৪.৫ ইঞ্চি পুরু কার্বন-কম্পোজিট ঢাল থাকবে।
যতক্ষণ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা সূর্যের কাছাকাছি গেলে কী ঘটে তা ব্যাখ্যা করতে পারছেন, ততক্ষণ মহাকাশের আবহাওয়ার প্রভাবগুলো যার কারণে পৃথিবী ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে, তা সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হবেন না।
নাসার মতে, এই মিশন ‘বিশাল সৌর ঘটনা’র পূর্বাভাস পেতে সাহায্য করবে। সূর্য-পৃথিবীর সংযোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে এই মিশন।