নরসিংদীতে হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড
---
নরসিংদীর পলাশে চাঞ্চল্যকর সামসুল হক হত্যা মামলায় একই পরিবারের চারজনসহ সাতজনেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
সোমবার দুপুরে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এ রায় দেন। একই সঙ্গে মৃত্যু হওয়ার আগ পর্যন্ত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথাও উল্লেখ করেন বিচারক।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মহব্বত আলী মুন্সির ছেলে আব্দুল গাফফার, সিরাজ মিয়ার ছেলে মারফত আলী, মইজ উদ্দিনের ছেলে আলেক মিয়া ও তার স্ত্রী রুপবান, তার ছেলে শরীফ মিয়া ও অপর ছেলে আরিফ মিয়া, মুল্লুক চাঁনের ছেলে তোতা মিয়া। আসামিরা সাবাই পলাশ উপজেলার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং সবাই পলাতক।
পাশাপাশি সামসুল হকের ছেলেকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অপরাধে অপর পাঁচজনকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে অথদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। দণ্ডিতরা হলেন আব্দুল গাফফার, আরিফ মিয়া, আলেক মিয়া, ফারুক মিয়া ও বাছির মিয়া।
অপরদিকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না থাকায় ১৩ জনকে খালাস দেন আদালত। নিহত সামসুল হক পলাশ উপজেলার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিহত সামসুল হকের সঙ্গে প্রতিবেশী আলেক মিয়া ও গাফফারের দ্বন্দ্ব চলছিল।
এ নিয়ে এক অপরের বিরুদ্ধে মামলা-পাল্টা মামলা করেন। এরই জেরে বিভিন্ন সময় মামলার আসামিরা অব্যাহতভাবে নিহত সামসুল হককে দেখে নেয়ার হুমকি দিতেন।
২০০৯ সালের ৩১ আগস্ট রাতে নিহত সামসুল হকের ছেলে জহিরুল ইসলাম বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে আসামি মারফত, শরীফ, আরিফ, জহিরুলকে মারপিট করতে থাকে। তার চিৎকারে বাবা সামসুল হক এগিয়ে যায়। ওই সময় আসামিরা বাবা-ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিতের পর পাশের একটি গর্তে ফেলে রাখে আসামিরা। খবর পেয়ে নিহতের স্বজন ও আশপাশের লোকজন সামসুলকে মৃত ও জহিরুলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সামসুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নূরজাহান বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে পলাশ থানায় হত্যা মামলা করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে পলাশ থানা পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক ও মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে অভিযুক্ত সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার দুপুরে এ রায় দেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এমএএন অলিউল্লহ। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শওকত আলী পাঠান।