জুয়েলার্স ও রেইন ট্রি কর্তৃপক্ষকে ফের তলব
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : আপন জুয়েলার্স ও দ্য রেইন ট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষকে সাফাই এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য আগামী ২৩ মে ফের তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। আজ বুধবার সন্ধ্যায় কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মঈনুল খান।
তিনি বলেন, আপন জুয়েলার্সের মালিকরা দাবি করেছেন তাদের স্টোরে কিছু কাগজপত্র থাকতে পারে, যা তাদের বৈধতা নিশ্চিত করবে। তারা সে কাগজপত্র জমা দিতে সময় চেয়েছেন। আমরা তাদের আগামী ২৩ মে পর্যন্ত সময় দিয়েছি।
এর আগে সকালে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে শুল্ক গোয়েন্দাদের তলবে রেইন ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ মো. আদনান হারুন উপস্থিত না হওয়ায় তাদেরকেও ২৩ মে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, আপন জুয়েলার্সের মালিকরা জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, জব্দ স্বর্ণের মধ্যে কয়েকজন গ্রাহকের স্বর্ণ রয়েছে, যা তারা রিপেয়ার করতে দিয়েছিল। আমরা বলেছি সে সব গ্রাহকদের স্বশরীরে উপস্থিতি ও স্বর্ণের কাগজপত্র যাচাইয়ের পর আমাদের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে ২২ মে সেগুলো আইনানুগভাবে ফেরত দেওয়া হবে।
এ সময় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আতঙ্কের কিছু নেই জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজস) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমাদের একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করতে চাই এখানে আতঙ্কের কোন কিছু নাই। আমরা একেবারেই সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে আপন জুয়েলার্সে অভিযান পরিচালনা করেছি। সুতরাং এখানে অন্য ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছি। এতে বলা হয়েছে চোরাচালানের দায়ে এতোদিন যে সব স্বর্ণ আটক করা হয়েছে, সেগুলো যেন নিয়মিতভাবে অকশন করা হয়। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যেন সেই অকশন করা স্বর্ণগুলো সংগ্রহ করতে পারেন।
আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে কতদিন আগে থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল? রেইন ট্রির ঘটনার পরই কেন সেখানে অভিযান চালানো হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বর্ণ নিয়ে তো আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। আমাদের কাছে প্রায়ই বিভিন্ন অভিযোগ আসে। সে সব অভিযোগ দিয়ে আমরা একটি ডাটাবেজ তৈরি করি। আপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা মনে করেছি এ বিষয়ে আরো গভীরভাবে অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। যেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে বনানীর ঘটনাটা ঘটেছে সেখানে ডার্টি মানির ব্যবহার হয়েছে। আসামি যেহেতু সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে তার বাবা স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত। এ রকম শক্ত স্টেটমেন্ট কিন্তু আমলযোগ্য। তখন আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমলে নেই। সব কিছু যাচাই-বাছাইয়ের পর আমরা সিদ্ধান্তে যাই যে এখানে আসলেই কোনো সমস্যা আছে। ২৫০ কোটি টাকার স্বর্ণের কোন স্বচ্ছতা নেই।
আজ বুধবার বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আপন জুয়েলার্সের তিন মালিক দিলদার ও তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যায় এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
এমডি/মানিক