সোমবার, ১লা মে, ২০১৭ ইং ১৮ই বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বৈশাখের তাপদাহে পুড়ছে রাজশাহী

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ২৮, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : কয়দিন আগেও রাজশাহীর আকাশে ছিল মেঘের ঘনঘটা। বৃষ্টিও হলো দুইদিন। মেঘ আর বৃষ্টির আড়ালে সূর্যের তেমন তেজও ছিল না। কিন্তু হঠাৎই পাল্টে গেল চিত্র। বৈশাখের মেঘ-বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ার বদলে আকাশের সূর্য থেকে এখন ঝরঝে আগুনঝরা উত্তাপ।

সূর্যের এ প্রখরতায় বাতাসের উত্তাপও বেড়েছে। বৈশাখি তাপদাহের ভ্যাপসা গরমে কাহিল হয়ে উঠছে রাজশাহীর জনজীবন। ঘরে কিংবা বাইরে, স্বস্তি মিলছে না কোথাও। এমন উত্তপ্ত পরিবেশে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দিনমজুররা। ঠিকমতো কাজও করতে পারছেন না তারা।

জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার মাগুইল থেকে প্রতিদিন রাজশাহী মহানগরীতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে আসেন আদিবাসী নারী শ্রীদেবী ওরাও। মধ্যবয়সী এই নারীর ভাষায়, প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণ। প্রতিনিয়ত শরীর থেকে ঝরছে ঘাম। একটু পর পর পানি পান করেও মিটছে না পিপাসা।

এদিকে গরমের কারণে বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরের ব্যস্ত সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে উঠছে। খুব জরুরী কাজ ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। আবার যারা বের হচ্ছেন, তাদের অনেকেই ভিড় করছেন ফুটপাতের ঠাণ্ডা শরবত কিংবা ডাবের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে। পথের ধারের শরবত স্বাস্থ্যকর কিনা, তা যাচাইয়ের চেষ্টাও করছেন না কেউ।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল শুরু হয়েছে ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টার এই তাপমাত্রার সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। কিন্তু বেলা ১১টায় আদ্রতা নামে ৬৫ শতাংশে। তখন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দুপুর ৩টায় তাপমাত্রার পারদ ওঠে সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল মাত্র ৩৭ শতাংশ।

এর আগে বুধবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরও আগে গত রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবার থেকে বুধবার ৪ দিনের মধ্যে রাজশাহীর তাপমাত্রা বেড়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহীতে সর্বশেষ বৃষ্টি হয়েছে গত শনিবার ২২ দশমিক ৬ মিলিমিটার।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহীতে খুবই সামান্য পরিমাণে বৃষ্টি হতে পারে। আবার না-ও হতে পারে। তবে আগামি তিন দিন আকাশ থাকবে মেঘলা। এই সময় বৃষ্টি না হলে বাড়বে ভ্যাপসা গরম। এতে দুর্ভোগ বাড়বে মানুষের।

তিনি জানান, প্রত্যাশিত বৈশাখের মৌসুমি বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রা কমবে। আবার মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হলেও তাপমাত্রা কমবে। তবে বায়ুপ্রবাহ শুরু হতে আরও দুই থেকে তিন দিন লাগতে পারে। বৃষ্টি আর মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও বাড়বে। এখন প্রাক বর্ষাকালের কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে বলেও জানান আশরাফুল আলম।

এ জাতীয় আরও খবর