বাংলাদেশের ‘হিরোস অব ১৯৭১’ গেম নিয়ে পাকিস্তানের চক্রান্ত!
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নির্মিত ভিডিও গেম ‘হিরোজ অব ৭১’ নিয়ে চক্রান্ত শুরু করেছে পাকিস্তানি হ্যাকাররা। গেমটির নতুন পর্ব রিটালিয়েশন (প্রতিশোধ) নিয়ে পাকিস্তান সাইবার ডিফেন্স ও পাকিস্তান ডিফেন্স নামে দুইটি পেজ গ্রাফিক ভায়োলেন্স ক্যাটাগরিতে রিপোর্ট করে গুগল প্লে স্টোর থেকে নামিয়ে ফেলার চেষ্টা চালায়।
পাকিস্তানের এই দুই হ্যাকার টিমের পোস্ট দ্রুত প্রায় সাড়ে চার শতবার শেয়ার করা হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে বিরুপ ব্যবহারের শিকার হতে হয় গেইমটিতে ব্যবহৃত মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও বিজয়ী বীরদের চরিত্রগুলোকে। তবে বাংলাদেশের তরুণরা যারা সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে সচেতন তাদের প্রতি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আহবান জানান ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশনের (ক্রাফ) প্রেসিডেন্ট জেনিফার আলম, সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ কাজী মিনহার মহসিন উদ্দিনসহ আরও অনেকেই।
ফলে পাকিস্তানের সাইবার ডিফেন্স ও পাকিস্তান ডিফেন্স নামে পেজ দুইটি শেষ পর্যন্ত তাঁদের কার্যক্রমে সফল হতে পারেনি। গত ৩০ মার্চ পাকিস্তানের এই সাইবার অ্যাটাক শুরু করার পরপরই বাংলাদেশের ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশন (ক্রাফ) পাকিস্তানের চাক্রান্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ নেয় বলে দাবি করছে সংগঠনটি।
এরপর শুরু হয় আরেক সাইবার যুদ্ধ। পাকিস্তানি ওই পেজ দুটির বিরুদ্ধে মাত্র ১ ঘণ্টার ব্যবধানে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায় লক্ষাধিক রিপোর্ট। পরবর্তীতে পেজ দুটির আর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। ক্রাফ প্রেসিডেন্ট জেনিফার আলম প্রিয়.কম-কে বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব ও গৌরবের প্রতি কেউ আঘাত করলে আজকের যুব সম্প্রদায় যে বসে থাকবে না তা আবারো প্রমাণ করলো ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশন।’
প্রসঙ্গত, ‘হিরোজ অব ৭১’ মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর একটি গেম। যাতে তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিরোধ ও গেরিলা হামলার পরিস্থিতি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই গেমসের মধ্যে রয়েছে হিরোস অব ৭১, যুদ্ধ ৭১, ব্যাটল অব ৭১, টিম-৭১, লিবারেশন-৭১, মুক্তিযুদ্ধ-৭১, ১৯৭১ ইত্যাদি।
এই বিষয়ে হিরোস অব ১৯৭১ গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পোর্টব্লিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মাশা মুস্তাকিম প্রিয়.কম-কে বলেন, ‘পাকিস্তানের স্থানীয় কিছু হ্যাকার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করতে আমাদের গেমের নামে গুগল প্লে স্টোরে রিপোর্ট করে। আমরা প্রাথমিকভাবে তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে না পারলেও গুগলে পাকিস্তানের এক্সেস বন্ধ করে দেই। এতে করে সেখান থেকে আমাদের বিরুদ্ধে আর কোন রিপোর্ট করতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে কোন সচেতনতা সৃষ্টি না করলেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এমনকি অনেকেই আমার ফেসবুক ইনবক্সে এসে ওইসব পেজের লিংক দিয়ে বলেছে তাদের নামে রিপোর্ট করতে। বাংলাদেশের সর্বস্থরের মানুষ আমাদেরকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করেছে।’