বাঞ্ছারামপুরে পরিত্যক্ত ভবনে দাঁড়িয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা
---
নিজস্ব প্রতিনিধি : পূজা দাস বয়স (১২) তার স্কুল বান্ধবী বিথি,প্রিয়ন্তী,সপ্নিল এবং প্রিয়া সবাই ৩য় শ্রেনির ছাত্রী। পড়ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে। উল্লেখিত ৫জনই ৩ ফুট ৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যরে ছোট্ট সরকারি স্কুল ব্যাঞ্চে। ব্যাঞ্চটিতে বই-খাতা রাখার যায়গা নেই। বসতে হচ্ছে গাদা গাদি করে। পূজা জানায়; ‘‘একটা ব্যাঞ্চে ৫ জন বইয়া ক্লাস করতে খুব কষ্ট হয়। একজনের কোলের উপর আরেকজন বসন লাগে। সারের পড়ায় মনোযোগ দিতে পারিনা’’। ৫ম শ্রেনির ছাত্র হাছিফ এর পিতা আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম স্কুলের অভিবাবক হিসেবে জানায়,‘‘ বৃষ্টির দিনে বৃষ্টির পানি ছাদ ভাইঙ্গা চুইয়া চুইয়া ক্লাসে পড়ে। ছাদের পলেস্তার খইসা পড়ে। আল্লাহ জানেন, কখন ছাদ ভাইঙ্গা পড়ে। আর্সেনিক যুক্ত টিউবওয়েল এর পানি খাওন লাগে। বাথরুম এত নোংরা যে বাথরুমে গেলে পশ্রাব করতে ইচ্ছে করবে না’’।
এই হল বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের‘‘ মডেলীয়’’ নমুনা!
১৯৩৯ সালে ২০ শতক ভূমির উপর মডেল স্কুলটি মরহুম আঃ গণি প্রতিষ্ঠা করেন স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সরকারি করন করা হয়। স্কুলটির ২টি ভবন। ১৯৯২ সালে একটি ভবনকে সরকারি ভাবে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করলেও গতকাল(বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা) সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা গেছে সেই পরিত্যাক্ত ভবনেই ঠাসাঠাসি করে দাড়িয়ে স্কাল করছে শিক্ষার্থীরা।
বাঞ্ছারামপুর পৌরশহরের মডেল স্কুলটি দীর্ঘদিন ধরে আসন সংকটে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। নতুন ভবন বরাদ্দ না পাওয়ায় শ্রেনি সংকটের কারনে প্রাক-প্রাথমিক ক্লাসের শিশুরা মেঝেতে আবার কখনো দাড়িয়ে ক্লাস করছে। বাঞ্ছারামপুরে এই স্কুল সবচেয়ে প্রাচীন ও নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৯শ ৩৫জন শিক্ষর্থী লেকা-পড়া করে। অথচ স্কুলের স্কাস রুমের সংখা মাত্র ৫ টি । এর মধ্যে শিশু শ্রেনির জন্য নির্ধারিত ক্লাসটি অত্যান্ত ছোট এবং জীর্ণশীর্ণ। শুধু চলতি ২০১৭ জানুয়ারিতে শিশু শ্রেনিতে ভর্থি হয়েছে ১৯১ জন। ১৪ জনের স্থলে ১২ জন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন।
শীত মৌসুমে মাটিতে বসে ক্লাস করতে শিশুদের কষ্টে দেখে অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদি ধরে ভবন সংকটের কারনে ব্যহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।
এ বিষয়ে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর রফিকুল ইসলাম বলেন ভবন সংকটের এই করুন অবস্থা সদর উপজেলা দপ্তরে জানালেও সমাধান মেলেনি। আসন সংকটের কারনে আমি হিমসিম খাচ্ছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নৌসাদ মাহমুদ বলেন‘‘পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন করতে গিয়ে জায়গা দখল হয়ে যেতে পারে, এই কারনে পরিত্যাক্ত ভবন ভাংঙ্গা হচ্ছে না’’। ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক বলেন,‘‘ বাঞ্ছারামপুর মডেল স্কুল ভবন সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে শিগগিরই সমস্যা সমাধান হবে।