মন্ত্রনালয়ের আদেশের পরও সিভিল সার্জনের চেয়ারে বসতে পারছেননা ডা: মুসা খান
---
আমিরজাদা চৌধুরী,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন-ড্যাব এর নেতা এই অভিযোগ তুলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সিভিল সার্জন হিসেবে পোষ্টিং পাওয়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু ছালেহ্ মো. মুসা খানকে যোগদানে বাধা দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতারা উপক্ষো করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা স্বাচিপের সভাপতি ডা. মো. আবু সাঈদ জোরপূর্বক স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক এবং আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহআলমকে সিভিল সার্জনের চেয়ারে বসিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ডা. আবু ছালেহ্ মো. মুসা খান।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন নিয়ে সোমবার দিনভর সিভিল সার্জন অফিসে যোগদানের আশায় বসেছিলেন ডা. মুসা খান। সিভিল সার্জনের দায়িত্বে থাকা ডা. মো. শাহআলম এই সময়ে অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি মুসা খান স্বাস্থ্য সচিব ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতাদের নির্দেশে তার যোগদানে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. হাসিনা আক্তার অবসরজনিত ছুটিতে যান ২৯ শে ডিসেম্বর। ঐদিন তিনি সিভিল সার্জনের দায়িত্ব আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মো. শাহআলমের কাছে বুঝিয়ে দেন। হাসিনা আক্তার স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের কাছে সিভিল সার্জনের দায়িত্বভার হস্তান্তর বিষয়ে দেয়া পত্রে বলেন- ১৯৫৮ সালের ১লা জানুয়ারী তার জন্ম তারিখ। সেই হিসেবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ইং তারিখে আমার বয়স ৫৯ বছর পুর্ণ হবে বিধায় আগামী ০১/০১/২০১৭ইং তারিখ থেকে অবসর-উত্তর ছুটিতে গমন করবো। এখানে উল্লেখ্য যে, আগামী ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ ইং সরকারি ছুটি থাকায় অদ্য ২৯/১২/২০১৬ইং তারিখে আমার শেষ কর্মদিবস হওয়ায় মহোদয়ের (পরিচালক) সঙ্গে টেলিফোনিক আলোচনার ভিত্তিতে সিভিল সার্জনের দায়িত্ব আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহআলমের নিকট হস্তান্তর করা হলো।
এদিকে, গত ২৭ শে ডিসেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডা. মুসা খানকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জনের চলতি দায়িত্বের আদেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ডা. মুসা খানকে ৩১/১২/২০১৬ইং তারিখের পর যোগদান করতে বলা হয়, সেই আলোকে ডা. মুসা খান সোমবার সিভিল সার্জন অফিসে যোগদান করতে যান। কিন্তু দায়িত্বে থাকা সিভিল সার্জন মো. শাহআলম না থাকায় তিনি যোগদান করতে পারেননি।
ডা. মুসা খান বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)- এর নেতা বলে দায়িত্ব না দেয়ার কথা জানান দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন শাহআলম। তবে সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, সিভিল সার্জন না থাকলে সাধারণত সদরের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকেই দায়িত্ব দেয়া হয়।
ড্যাবের নেতা হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ডা. মুসা খান বলেন, আমি কোনো সময় ড্যাবের সঙ্গে যুক্ত নই, ড্যাবে আমার কোনো সদস্য পদও নেই। আমাকে সিভিল সার্জনের দায়িত্ব না দেয়ার জন্যই স্বাচিপ নেতারা এখন আমাকে জোরপূর্বক ড্যাব নেতা বানাচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে ডা. শাহআলমকে সিভিল সার্জনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যদিও ডা. শাহআলমের সিভিল সার্জন হওয়ার সময় এখনো হয়নি।
তবে জেলা স্বাচিপের সভাপতি ডা. মো আবু সাঈদ বলেন, ডা. মুসা খানের অভিযোগ সঠিক নয়, ডা. শাহআলমকে সিভিল সার্জনের দায়িত্ব দেয়ার ব্যাপারে আমি কেউ নই। বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বাচিপ তদারকি করছে।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহআলম বলেন, মুসা খান ড্যাবের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার নেতা ছিলেন। বিষয়টি আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে অবগত করেছি। মন্ত্রী সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর বিষয়টির সুরাহা হবে।