g আলোর গতি কমানো সম্ভব! | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শনিবার, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ২৫শে ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

আলোর গতি কমানো সম্ভব!

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ২৫, ২০১৫

---

841bc3637576354e1929ad14e39a5d5c-5আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আলোর গতি কমানো সম্ভব হয়েছে বলে স্কটল্যান্ডের একদল বিজ্ঞানী দাবি করছেন। তাঁরা আলোর চলার পথে একটি বিশেষ আবরণের মাধ্যমে ফোটন সরবরাহ করেন। এতে ফোটনগুলোর আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং আলো নিজস্ব গতির চেয়ে কম গতিতে চলাচল করে। মুক্ত স্থানে ফিরে যাওয়ার পরও এসব ফোটনের তুলনামূলক ধীরগতি অব্যাহত থাকে।
আলো মুক্ত অবস্থায় ঘণ্টায় ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৮২ মাইল গতিতে চলাচল করেফোটন হচ্ছে আলোর একেকটি পৃথক কণা। এই পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনায় নিলে অালো সম্পর্কে বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যেতে পারে। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় এবং হেরিয়ট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী আড়াই বছর আগে ওই গবেষণা চালান। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন সায়েন্স এক্সপ্রেস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
আলো মুক্ত অবস্থায় ঘণ্টায় ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৮২ মাইল গতিতে চলাচল করে। এই গতিকে ধ্রুব বা পরম ধরা হয়। পানি বা কাচের মতো বস্তুর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় আলোর গতি কমে গেলেও মুক্ত অবস্থায় যাওয়ার পরই তা আগের গতি ফিরে পায়। এখন পর্যন্ত এমনটাই ঘটেছে। কিন্তু নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, আলোর গতি কিছুটা কমিয়ে তা আরও ধীর করে দেওয়া সম্ভব।
গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানী জ্যাকুলিন রোমেরো, দানিয়েল গিওভান্নিনি ও তাঁদের সহযোগীরা ফোটনের একটি গতিপথ তৈরি করেন। পরে তাঁরা ফোটনগুলো দুই ভাগ করে নেন। একটিতে ফোটনগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা হয়। অপরটিতে সেগুলো বিশেষ আবরণ বা মুখোশের মধ্যে রাখা হয়, যা ফোটনকে নিজ আকৃতি পাল্টে আলোর চেয়ে ধীরগতিতে চলতে বাধ্য করে। রোমেরো বলেন, মুখোশ পরানো ফোটনগুলো প্রায় এক মিটার লম্বা একটি গতিপথে রাখা হয়। তারপর কিছুটা সময় নিয়ে আকারবিহীন সব ফোটনকে গতিপথজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তারপর নির্দিষ্ট আকারের ফোটনগুলোর সঙ্গে তাদের আগের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করা হয়; নির্ণয় করা হয় সময়ের ব্যবধানও।
যদি একই গতিতে সেগুলো চলাচল করত, তাহলে এই গবেষণায় নতুন কিছুই পাওয়া যেত না। কিন্তু গতির লড়াইয়ে নতুন আকারের ফোটনগুলো দ্বিতীয় হয়েছে। এই ব্যবধান খুব সামান্য। কিন্তু কেবল মুখোশকেই ফোটনের গতি হ্রাসের একমাত্র কারণ বলার সুযোগ নেই। কারণ, মুক্ত অবস্থানে যাওয়ার পরও ফোটনগুলোর ধীরগতি বহাল থাকে।
আলো নিজ গতির চেয়ে কম গতিতে চলাচল করবে—সবার আগে কে এমন ধারণা করেছিলেন? হেরিয়ট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দানিয়েল ফাচ্চিও এবং গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইলস প্যাজেটের আলাপচারিতায় প্রসঙ্গটি প্রথম এসেছিল। প্যাজেট বলেন, আলোর গতি কমানোর ব্যাপারে মুখোশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আসলে সফটওয়্যার-নিয়ন্ত্রিত একধরনের তরল স্ফটিক যন্ত্র। এটি আলোর দীপ্তির নকশা তৈরি করে। এতে গতি কমে যায়। কিন্তু সেই নকশা একবার আরোপ করা হয়ে গেলে আলো মুখোশের আওতার বাইরে চলে যাওয়ার পরও ধীরগতি বজায় থাকে।
কিন্তু ফোটন যদি একটি অতি ক্ষুদ্র কণা হয়ে থাকে, এটির ওপর কোনো নকশা আরোপ করা কীভাবে সম্ভব? কারণ, ফোটন একটি অদ্ভুত জিনিস এবং কোয়ান্টামের অসাধারণ এক ক্ষেত্রকে ধারণ করে, সেখানে আমাদের পৃথিবীর অনেক নিয়মই ঠিকমতো খাটে না। পদার্থবিদেরা যাকে বলেন ‘তরঙ্গ-কণা দ্বৈত’, সেটা ফোটনের মাধ্যমেই প্রতিফলিত হয়। ফোটন কণাগুলো একইসঙ্গে তরঙ্গ এবং কণার মতো আচরণ করতে পারে। তাই দুটি কণার মতো তাদের কোনো গতিপথে চলতে দেওয়া হলে তাদের একটি আকার পরিবর্তন করে তরঙ্গ হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ব্যাপারটা জটিল মনে হচ্ছে? আসলেই তা-ই। গিওভান্নিনি বলেন, ব্যাপারটা আসলে অনেক, অনেক মজার। বিজ্ঞানের এক বড় ও মৌলিক প্রশ্ন থেকেই এই গবেষণার সূত্রপাত হয়েছিল।