g রোহিঙ্গা নিপীড়ন : মোদী কেন চুপ ? | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শনিবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ১লা আশ্বিন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা নিপীড়ন : মোদী কেন চুপ ?

AmaderBrahmanbaria.COM
সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৭

---

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার রাখাইনে বর্বরতম রোহিঙ্গা নির্যাতনের মধ্যে মিয়ানমার সফর করলেও এ নিয়ে একটি কথাও বলেননি, বরং মিয়ানমারের সঙ্গে থেকে ‘জঙ্গি-সন্ত্রাস’ প্রতিরোধে সমর্থন দিয়েছেন। মোদীর এই রহস্যজনক নীরবতার নেপথ্যে কী আছে – জানার চেষ্টা করেছে জারমান রেডিও ডয়চে ভেলে। নিচে তারই বিবরণ।

মোদীর এই সফর নিয়ে যাঁরা আশা করে বসেছিলেন যে তিনি রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে কিছু একটা বলবেন, তাঁরা আশাহত হয়েছেন এবং মোদীর এই ‘’চুপ থাকার কূটনীতি” নিয়ে এখন হিসেব কষছেন। সেই হিসেবে দেখা যাচ্ছে, মূলত অর্থনীতি, ভূ-রাজনীতি ও দলীয় নীতির কারণেই মোদী রোহিঙ্গাদের নিয়ে কোনো আগ্রহ দেখাননি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমার এখন ভারতের কাছে নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সফরে দেশটিকে আরো কাছে টানতে তৎপর ছিলেন মোদী। তিনি মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ইয়াঙ্গুনের কালীমন্দিরে গেছেন, পুজোও দিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, ভারত এখন ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড – ত্রিদেশীয় হাইওয়ে প্রকল্প নিয়ে স্বপ্ন দেখছে। আর তার জন্য প্রথম যাকে লাগবে, সেই দেশটি হলো মিয়ানমার। আসিয়ান জোটের দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতেও প্রথম যাকে ভারতের দরকার, সে দেশটিও হলো মিয়ানমার। বিমসটেক জোটেও ভারতের সহযোগী মিয়ানমার। তাই ‘কানেকটিভিটি’ ও ব্যবসা-বাণিজ্যে মিয়ানমার ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে আবার মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এখন ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিয়ানমারে কায়াখফু বন্দর তৈরি করে দিচ্ছে চীন। এছাড়া দু’দেশের মধ্যে গ্যাস লাইন বসানোর কাজও চলছে।

অন্যদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দিয়ে প্রায় ৫০ কোটি ডলার খরচ করে ‘কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রান্সপোর্ট প্রোজেক্ট’-এর কাজ করছে ভারত। এই প্রজেক্ট ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরের মধ্যে সরাসরি সংযোগ গড়ে তুলবে। ভারতের টার্গেট – বাংলাদেশ যদি কখনো ভারতকে ট্রানজিট দিতে অস্বীকার করে, তাহলে মিয়ানমারের মধ্য দিয়েই হবে ট্রানজিট।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘মিয়ানমারকে চটানোর কোনো কারণ নেই ভারতের। তারা চীনের কারণে মিয়ানমারকে সঙ্গে নিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করতে চায়। বঙ্গোপসাগরে ভারতের বড় স্বার্থ আছে, আর ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্যও মিয়ানমার ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার দীর্ঘদিন ধরেই চীনের প্রভাববলয়ে আছে। ভারত চাইছে চীনের সেই প্রভাবটা হালকা করে দিতে। ভারতের কাছে ভূ-রাজনৈতিকভাবে মিয়ানমার গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশেরও গুরুত্ব আছে, তবে তা মিয়ানমারকে বাদ দিয়ে নয়। তাই মিয়ানমার নিয়ে বাংলাদেশের কোনো প্রত্যাশা আছে কিনা, মোদী সেটা মাথায় রাখার প্রয়োজন মনে করেননি।’

অধ্যাপক মজুমদার মনে করেন, ‘বিজেপির নীতির সঙ্গেও চমৎকার মিলে গেছে মোদীর এই আচরণ। বিজেপি একটি সাম্প্রদায়িক দল, তাই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান নির্যাতন নিয়ে মোদীর কথা না বলাটাই স্বাভাবিক।’

এ জাতীয় আরও খবর