ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ, কৃষকের মুখে হতাশা
তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : এক জমি অন্য জমিতে চোখের পলকে ছড়িয়ে পড়ছে আধাপাকা ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ। সকালে ধানের জমির এক কোণায় দেখা দিলে বিকেলে সারা জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকার কৃষকের চোখে মুখে দুশ্চিন্তার আর হতাশার ছাপ দেখা গিয়েছে। গতবারে পাহাড়ি ঢলে হয়েছে ফলস নষ্ট আবার এবার ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ায় তাদের মন ভেঙে গেছে।এভাবে এক পর এক ফলস নষ্টের ফলে মহাজনের সুদ ও ধার দেনার দায়ে কৃষকরা নি:শ্ব হয়ে পড়ছে।
আখাউড়া সীমান্ত ঘেঁষা ইটনা গ্রামের কৃষক শফিক মিয়া বলেন, সহায় সম্বলহীন একজন কৃষক আমি । আমার এক ইঞ্চি জায়গা বলতে নেই। অন্যের বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন। দিন মজুরি দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। চড়া সুদে টাকা এনে ৬০ শতাংশ জমি ১০ হাজার টাকা দিয়ে পতন (ইজারা) রেখে বোরো চাষাবাদ করেছেন। ভারতের সীমান্ত পিলার ঘেঁষা লক্ষ্মীপুর মৌজায় বি ২৮ বোরো ধান চাষ করেন। তার ওই ক্ষেত পুরোটায় ব্লাস্ট (ছত্রাক) রোগে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ক্ষেত করতে গিয়ে সেচ, সার কীটশাসকসহ প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। এতে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
আরেক কৃষক সিরাজ মোল্লা বলেনন, ৯০ শতাংশ জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলাম। এর মধ্যে ৪৫ শতংাশ জমি তার নিজের ও ৪৫ শতাংশ জমি বর্গা চাষ করেছেন। তার ক্ষেতের পাশের ক্ষেতে ব্লাস্ট (ছত্রাক) রোগ দেয়া পর এখন তার জমিতে এ রোগের ছএাক দেখা দেওয়ায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে ঘুরে আখাউড়ার সীমান্ত এলাকার ইটনা, লক্ষ্মীপুর, আইরল, জয়নগর, নূরপুর, ছয়গড়িয়া, কর্নেল বাজারের বেশ কিছু ধান ক্ষেত দূর থেকে গিয়ে দেখা যায় ধান পেকে গেছে। কাছে গিয়ে দেখা যায় পাকা ধান ঠিকই কিন্ত ওইসব ধানে ক্ষির নেই। ওইসব ধানে প্রাণ নেই। শুধু ক্ষির ছাড়াই ধানের শীষগুলো ঠাই দাঁড়িয়ে রয়েছে। ধানের শীষগুলো শুকিয়ে চিটা হয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষি অফিসের কর্মকতারা বলছেন বি ২৯ ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে ধানের শীষগুলো চিটায় পরিণত হয়ে পড়েছে।
ধানের শীষগুলো দুধাবস্থায় পরিণত হওয়ার পর দিনে গরম ও রাতে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এ রোগ প্রতিরোধে কৃষকদের আগে থেকে বিভিন্ন ওষধ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে।