শনিবার, ১৪ই এপ্রিল, ২০১৮ ইং ১লা বৈশাখ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

যেসব কারণে কালো হচ্ছে আন্ডার আর্ম

মুখ, হাত, পা দেহের যে অংশ বাইরে থেকে চোখে পড়ে সেগুলোতে কোনো সমস্যা হলে আমরা খুব তাড়াতাড়ি যত্ন নিতে পারি। আর যে অংশ ঢাকা থাকে সেগুলো নিয়ে খুব কম মানুষই আছে যারা মাথা ঘামান। কিন্তু শুধু বাইরের সৌন্দর্য তো আসল না। আপনি তখনই আসল সৌন্দর্য খুঁজে পাবেন যখন আপনি আপনার মাথার চুল থেকে শুরু করে পায়ের নখ পর্যন্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি করে রাখতে পারবেন। আমাদের দেহের এমনই একটা অংশ হচ্ছে আন্ডার আর্ম। যেখানে সৃষ্টি হওয়া ঘমের দুর্গন্ধ আপনাকে অনেক অস্বস্তিতে ফেলে দিতে পারে। আবার আন্ডার আর্মে হওয়া কালো দাগ আপনাকে ও আপনার ফ্যাশনকে একদম ডাউন করে দিতে পারে। আর ব্যক্তিগত স্বস্তিবোধের ব্যাপার তো রয়েছেই। তাই জেনে নেওয়া যাক আন্ডার আর্মের কালো দাগ হওয়ার কারণ ও তার প্রতিকার।

কারণ:

অতিরিক্ত ডিওডোরেন্ট বা বডি স্প্রে ব্যবহার : আমরা নিজের ঘামের গন্ধ দূর করতে আন্ডার আর্মে নানা ধরনের ডিওডোরেন্ট আর বডি স্প্রে ব্যবহার করে থাকি। অনেক সময় এর ডেড লাইন এমনকি কোম্পানির ভালো-মন্দ চিন্তা করি না। ঘ্রাণের উপর নির্বাচন করে কিনি। আর এসব কম দামি বডি স্প্রের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আন্ডার আর্মে ঘাম আর কালো দাগের সৃষ্টি হয়।

সেভিং : অনেকেই আন্ডার আর্ম বা বাহুর নিচে থাকা অবাঞ্ছিত লোম রেজার দিয়ে পরিষ্কার করে থাকেন। এতে আন্ডার আর্মে কালো দাগের সৃষ্টি হয়। রেজার ব্যবহার করলে কেবল উপরে স্তরের লোমই উঠে আসে যাতে জায়গাটি কালো দেখায়। এই ক্ষেত্রে লোম দূর করার বিভিন্ন ক্রিম বাজারে পাওয়া যায়। আপনি সেই সমস্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। যাতে কালো দাগ ও পড়বে না এবং আপনার আন্ডার আর্মে ঘাম জমে কালো দাগেরও সৃষ্টি হবে না।

মৃতকোষ: আমাদের দেহের প্রত্যকটি অংশে লোমকূপ আছে। আর তাতে আছে মৃত কোষ। এই মরা কোষগুলো কালো দাগের সৃষ্টি করে। মরা কোষ দূর করার জন্য আপনি স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। তবে স্ক্রাবটি যেন ল্যাকটিক এসিড সমৃদ্ধ হয়।

ঘর্ষণ : যখন খুব টাইট পোশাক পরি তখন কাপড়ের সাথে আন্ডার আর্ম বা বাহুর নিচের ত্বকের ঘর্ষণের কারণে দাগ হতে পারে, যা পরে কালো দাগ সৃষ্টি করে। পোশাক এমন হতে হবে যা গরমে আরামদায়ক এবং যার ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে।

ডায়াবেটিস : ডায়াবেটিসের কারণেও আন্ডার আর্ম বা বাহুর নিচ অংশটি কালো হতে পারে। আর এর অন্যতম কারণ এর হচ্ছে পিগমেন্টেশন। একারণে ইনসুলিন লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার।

বংশগত কারণ : অনেকেরই বংশগতভাবে কিংবা অ্যালার্জিজনিত সমস্যার কারণে আন্ডার আর্মের নিচের কালো দাগ চোখে পড়ে। এর জন্য আপনি আন্ডার আর্মে পাউডার কিংবা ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন। তবে দাগ বেশি হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।

প্রতিকার:

. প্রথমেই হেয়ার রিমুভিং ক্রিম ব্যবহার করা বন্ধ করুন। কারণ হেয়ার রিমুভিং ক্রিম দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে আন্ডার আর্ম কালো হয়ে যায়।

. আন্ডার আর্মের লোম পরিষ্কার করতে ওয়াক্সিং করা খুব ভালো। ওয়াক্সিং এর সময় লেবু ও চিনির মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়, যা কিছু দিন ব্যবহার করলে আপনার স্কিন টোনকে উজ্জ্বল করবে।

. বেসন, টক দই, লেবুর রস, অল্প হলুদ মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন। সপ্তাহে ৩ দিন এই পেস্টটি আন্ডার আর্মে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

. রেজার ব্যবহারের ফলে আন্ডার আর্ম কালো হয় যায় এবং লোম আরও ঘন হয়। তাই রেজার ব্যবহার না করাই ভালো।

. আন্ডার আর্মের কালো দাগ রোধ করতে মুলতানি মাটি, মধু ও পরিমাণ মতো লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।

. আলু প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে। আলু পাতলা করে কেটে আন্ডার আর্ম বা বাহুর নিচে ঘষতে পারেন বা আলুর রস বের করেও লাগাতে পারেন। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। একইভাবে শশা ব্যবহার করতে পারেন।

. এক চিমটি জাফরান ২ চামচ দুধে অথবা ক্রীমে মিশিয়ে শোবার সময় আন্ডার আর্ম বা বাহুর নিচে লাগান। পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন।এটি শুধু বাহুর নিচের অংশকে ফর্সাই করে না, জার্ম ও ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস করে।

. প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে শরীরের গন্ধ কিছুদিনের জন্য দূর করুন। বেকিং সোডা অল্প পানিতে দিয়ে আন্ডার আর্ম বা বাহুর নিচটা ধুয়ে ফেলুন। ডিওডোরেন্ট সরাসরি শরীরে না লাগিয়ে কাপড়ে লাগান।

. চন্দন ও গোলাপজল একসাথে মিশিয়ে লাগান। চন্দন এর ফর্সাকারী উপাদান দিয়ে ফর্সা করবে আর গোলাপ জল ত্বক রাখবে ঠান্ডা আর নরম।

Print Friendly, PDF & Email