সোমবার, ৪ঠা জুন, ২০১৮ ইং ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুর-আড়াইহাজার ফেরিঘাটে নৈরাজ্য।রাত হলেই বাড়ে ভোগান্তি!

ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ফেরিঘাটে মেঘনা নদী পারাপারে ট্রলার মালিকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে যাচ্ছে।যেন দেখার কেউ নেই।প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তি বদলায়,কিন্তু এখানকার নৈরাজ্য থামানোর কেউ যেনো নেই।দিনে ট্রলারে দ্বিগুন ভাড়া আবার রাতে স্পীডবোর্টে যাত্রীদের জীম্মি করে গলাকাটা ভাড়া আদায়সহ যাত্রী পারাপারের নামে মাদক বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে ২০১০ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকা-সিলেট নৌপথের মেঘনা নদীতে কড়িকান্দি-বিষনন্দী ফেরি চালু করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। কড়িকান্দি পন্টুন থেকে বিষনন্দী পল্টুন পর্যন্ত মেঘনার দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। কড়িকান্দি-বিষনন্দী ফেরিঘাট ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর; কুমিল্লার হোমনা, মুরাদনগর উপজেলার মানুষ নিয়মিত চলাচল করছে।দিন-রাত মানুষ যাতায়াত রয়েছে এই রুটে।

আড়াআড়িভাবে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় (ট্রলার) নদী পার হতে ৮-১০ মিনিট লাগে। নদী পার করতে জনপ্রতি ভাড়া ১০ টাকা হলেও ট্রলার মালিকদের সিন্ডিকেট তাদের মতো করে ২০ টাকা হারে আদায় করতে সরেজমিনে দেখা গেছে। আর যাত্রী পারাপারের কাজ করছে বাঞ্ছারামপুর ও আড়াইহাজারের শতাধিক ইঞ্জিনচালিত নৌকা।

গত আজ বুধবার ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কড়িকান্দি ও বিষনন্দী ঘাট থেকে প্রতিটি ট্রলারে ৩০-৪০ জন করে যাত্রী পারাপার করছেন ট্রলারমালিকেরা। প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ২০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

যাত্রী মো. নাজির হোসেন বলেন, ‘আমি সপ্তাহের তিন-চার দিনই ট্রলার দিয়া নদী পার হচ্ছি। কিন্তু প্রতিবারই নদী পার করতে ২০ টাকা করে নিচ্ছেন ট্রলারমালিকেরা। মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বের জন্য জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া আদায়; এটা একেবারে জুলুম। অথচ একই জায়গা থেকে ৮-১০ কিলোমিটার দূরত্বে থাকা গোপালদী পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয় ২০ টাকা।’
আরেক নারী যাত্রী রুকসানা বেগম বলেন, ‘আমরা যাত্রীরা ট্রলারচালকদের কাছে জিম্মি। ১০ টাকার ভাড়া ২০ টাকা আদায়ের প্রতিবাদ করলে ট্রলারমালিকেরা এক জোট হয়ে যাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। যাত্রীরা অসহায় হলেও দেখার কেউ নাই।’

কড়িকান্দির ট্রলারচালক মো.শাহাদৎ বলেন, ‘ঘাটে যাত্রীর চেয়ে নৌকার মালিক বেশী।আবার মালিকের চেয়ে নৌকা বেশী।ফলে টাকা একটু বেশী-ই নেয়া হচ্ছে-এটা রিপোর্ট না করলে আমরা খুশী হই ’
মাদক আসছে স্পিড বোর্টে করে !
এদিকে,রাতে এ রুটে ট্রলারের পরিবর্তে টর্চ লাইটে করে যাত্রী পারাপারের জন্য স্পীড বোর্ট ব্যবহ্নত হয়।দেড় কিলোমিটারের নৌপথ ভাড়া নেয়া হয় ৫০ টাকা।যাত্রীরা অনোন্যপায় হয়ে যেতে হয়।অথচ,পাশর্^বর্তী মরিচাকান্দি হতে নরসিংদী ১৪ কি:মি: নৌ পথে স্পীড বোর্টে নেয়া হয় ১শত টাকা।

অভিযোগ রয়েছে,-‘যাত্রী পারাপারের নামে এই স্পীড বোর্টে করে সম্প্রতি ইয়াবা, ফেন্সিডিল,বিয়ার ইত্যাদি মাদক বাঞ্ছারামপুরে ঢুকছে’।আড়াইহাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’বাঞ্ছারামপুরের ইউএনও মো.শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

 

Print Friendly, PDF & Email