বাঞ্ছারামপুরে মুমূর্ষু এক নদীর নাম ‘ঢোলভাঙা’
ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর : একদিকে যুগযুগ ধরে খননবিহীন অবস্থা অন্যদিকে বিবেকবিহীন কিছু মানুষের বর্জ্যফেলার তান্ডব-দুইয়ে মিলেমিশে ঐতিহ্যবাহী তিতাস বিধৌত বাঞ্ছারামপুর উপজেলার প্রাণের নদী ঢোলভাঙা আজ মূমূর্ষ অবস্থাই বটে।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চারপাশ দিয়ে ঘিরে কৃষকের জমিতে বিনে পয়সায় পানি,পণ্য ও যাত্রীদের বহনে সহায়তা, মৎস্য জীবিদের রুটি-রুজির মাধ্যম,মাছের নিরাপদ অভয়ারণ্যসহ অসংখ্য সেবা দিয়ে আসছিলো যে নদীটি,-সেটিকে আজ ‘মড়াগাঙ’ বলা চলে।এলাকাবাসী মজা করে ডাকেনও ‘মড়াগাঙ’ বলে।
বাঞ্ছারামপুরবাসী জীবনযাত্রার সাথে এই ঢোলভাঙা ‘নদী ও মানুষ’ একে অন্যের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। একটা সময়,নদীমার্তৃক ও হাওরবিধৌত বাঞ্ছারামপুরের ব্যবসায়ীদের পণ্য সামগ্রী আসতো বিভিন্ন মোকাম থেকে। ড্রেজিং এর অভাবে সে নৌপথ শুকিয়ে তা আজ বন্ধ।অথচ,নদীটির উপর ভর করেই গড়ে উঠেছে আজকের বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদর।উপজেলার প্রাণকেন্দ্র দিয়ে বয়ে গেছে ঢোলভাঙা নদী।
নদীটির মূল অংশের ত্রিমোহনায় মাটি ভরাট করে দখল করেছে কিছু প্রভাবশালী ভূমিদস্যু।গড়ে তুলেছেন স’মিল, সুরম্য বানিজ্যিক মার্কেট,পাইকারী বিক্রির জন্য বিভিন্ন প্রকার বাঁশ বাজার।সে বাঁশ নদী পথ বন্ধ করে নৌ চলাচলে ব্যাহত করছে।বাজারের শত-শত ব্যবসায়ীরা নিত্যদিন ফেলছেন টনের টন পলিথিনসহ নোংরা ময়লা। ফলে দুষিত হচ্ছে পানি।ভরে যাচ্ছে নদীর তলদেশ।
এলাকার সংস্কৃতিকর্মী ও ব্যাংকার মো.সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘জীবন, জীবিকা, সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্য সবকিছুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এই নদীটি।কিন্তু প্রকৃত অর্থে নদীটির জন্য এখনো কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। নদী রক্ষায় পদক্ষেপ থাকা তো দূরের কথা বরং আমরাই মেরে ফেলছি নদীটিকে।দূষণ ও দখলের কারণে অস্থিত্ব সংকটে পড়ছে নদীটি।বাঞ্ছারামপুরবাসী একদিন কাঁদবে এই ঢোলভাঙার জন্য’’
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শরিফুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে বলেন,-‘বাজারের লোকজন যেনো নদীটিতে আর ময়লা-আবর্জনা না পেলে সেজন্য শীঘ্রই পদক্ষেপ নেবো।নদী খনন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি লিখাসহ মাননীয় সংসদ সদস্য ক্যা.(অব.) এবি তাজুল ইসলামকে ড্রেজিং করার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হবে।’