রাজধানীতে হচ্ছে যাত্রীবান্ধব ৩০ বাস-বে
রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহনে যাত্রী ওঠা-নামার সুবিধার্থে ৩০টি অত্যাধুনিক বাস-বে নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এর মাধ্যমে নির্ধারিত স্থান থেকেই বাসে ওঠা-নামা করা যাবে, রোদ-বৃষ্টির মধ্যে যত্রতত্র দাঁড়াতে হবে না। কমবে দুর্ঘটনাও। উন্নত দেশগুলোর বাস-বে’র মতো এসব বাস-বে’তে থাকবে উন্নত ফুটপাত, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, ওয়াইফাই, টি-স্টল, মোবাইল ফোন চার্জের ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সড়কের শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় আসবে আমূল পরিবর্তন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীর সড়কগুলোয় যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামার কারণে দুর্ঘটনার পাশাপাশি যানজটও দেখা দেয়। তাছাড়া রোদ-বৃষ্টিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় যাত্রীদের। এজন্যই আধুনিক বাস-বে নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আর এসব বাস-বে ব্যবহার না করলে চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিএসসিসি’র মেগা প্রকল্প ‘অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে’র আওতায় নির্মিত এ প্রকল্পটির ব্যয় ধারা হয়েছে ৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুনে মধ্যে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসি’র ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব খাদেম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাস-বে নির্মাণের কাজ শেষ হলে গণপরিবহনে নগরবাসীকে আর হয়রানির শিকার হতে হবে না। রোদ-বৃষ্টিতে তারা এখানে আশ্রয় নিতে পারবেন। পরিবহন ব্যবস্থায় কিছুটা হলেও শৃঙ্খলা ফিরবে।’
তিনি জানান, এরই মধ্যে আজিমপুরে একটি বাস-বে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এর কাজ শেষ হলে মেয়রকে দেখানোর পর বাকিগুলোর কাজ শুরু হবে।
জানা গেছে, ডিএসসিসি’র অন্তর্ভুক্ত এলাকাকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করে এই বাস-বে’গুলো নির্মাণ করবে। এর মধ্যে মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে আজিমপুর রুটে নির্মাণ করা হবে ছয়টি বাস-বে। জায়গাগুলো হলো, মানিক মিয়া এভিনিউ মোড়ে ধানমন্ডি স্কুলের সামনে, মেট্রো শপিংমলের বিপরীতে, কলাবাগান সিগন্যালের দক্ষিণ পাশে, আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের সামনে, নিউমার্কেট মোড় পার হয়ে পেট্রোল পাম্পের দক্ষিণ পাশে ও আজিমপুর চৌরাস্তার উত্তর পাশে।
এরই মধ্যে আজিমপুর চৌরাস্তার উত্তর পাশের বাস-বে’র নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। একই রুটের বিপরীত পাশে আরও ছয়টি বাস-বে নির্মাণ করা হবে। এগুলো হলো, আজিমপুর এতিমখানা ও স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে, নিউমার্কেট সংলগ্ন চৌরঙ্গী মার্কেটের সামনে, সিটি কলেজের উত্তরে ২ নম্বর রোডের পাশে, কলাবাগান সিগন্যাল পার হয়ে ধানমন্ডি মাঠের সামনে ও মেট্রো শপিংমলের উত্তর পাশে।
এদিকে, যাত্রাবাড়ী-ইত্তেফাক-শাপলা চত্বর-পল্টন-শাহবাগ-পান্থকুঞ্জ রুটে নির্মাণ হবে তিনটি বাস-বে। এর মধ্যে একটি বাস-বে হবে যাত্রাবাড়ী মোড়ে শহীদ ফারুক সরণির মুখে, একটি সায়েদাবাদ পেট্রোল পাম্পের সামনে ও একটি হাটখোলা ক্রসিংয়ে। একই রুটের বিপরীত পাশে নির্মাণ হবে আরও তিনটি বাস-বে। জায়গাগুলো হলো, শাপলা চত্বরের উত্তরে জনতা ব্যাংক করপোরেট ভবনের সামনে, বাংলাদেশ ব্যাংকের উত্তরে ও যাত্রাবাড়ী থানার সামনে।
বাস-বেগুলোর মধ্যে মগবাজার-মালিবাগ থেকে গুলিস্তান-বংশাল-সদরঘাট রুটে থাকবে ছয়টি। জায়গাগুলো হলো, মলিবাগ স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) অফিস ও কাকরাইল এইচ আর বিল্ডিংয়ের সামনে, জিপিও’র পশ্চিম পাশে, গোলাপ শাহ মাজারের সিগন্যাল ক্রস করে দক্ষিণ পাশে, তাঁতীবাজার মোড় ও ভিক্টোরিয়া পার্ক। এই রুটের বিপরীত পাশে ছয়টি বাস-বে’র জায়গাগুলো হলো, ভিক্টোরিয়া পার্ক মোড়, টিঅ্যান্ডটি অফিসের পূর্ব পাশে (ফুলবাড়িয়া), সচিবালয়ের পূর্ব দিকে, কাকরাইল বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ভবনের পূর্ব পাশ, মালিবাগ মোড় ও মগবাজার চৌরাস্তা ফ্লাইওভারের নিচে।