১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি লাভ করে। পরের বছর থেকে দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালন করা হচ্ছে।
কিন্তু ১৮ বছর ধরে দিবসটি পালিত হলেও এটি পালনকারী জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থার (ইউনেসকো) ওয়েবসাইটে দিবসটির পেছনের ইতিহাস এবং ভাষা আন্দোলনের শহীদদের অবদানের কোনো উল্লেখ ছিল না। জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে মাত্র একটি বাক্যে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে এটির যোগসূত্রের কথা বলা আছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোতে মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস বিশ্ববাসী এখনো জানে না শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে জাতিসংঘের ওয়েব পাতায় নতুন তথ্য সংযোজনের কথা উল্লেখ ছিল। তবে এখন ওয়েব পাতায় দিবসের ইতিহাসে বাংলাদেশের কোনো নাম নেই।
জাতিসংঘ ও ইউনেসকোর ওয়েবসাইটে দিবসটির হিস্ট্রি বা ব্যাকগ্রাউন্ডে বাংলাদেশ নিয়ে কোনো তথ্য না থাকার বিষয়টি ই-মেইলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শান্তা তাওহিদা। তিনি বর্তমানে জার্মানিতে পড়াশোনা করছেন। কয়েক দফায় ই-মেইল করার পর এবং দিবসটির স্বীকৃতির পেছনে বাংলাদেশের যোগসূত্র সম্পর্কিত কিছু তথ্য দেওয়ার পর জাতিসংঘের ওয়েব টিম ১৪ ফেব্রুয়ারি জার্মানি সময় রাত ১০টা ২২ মিনিটে ই-মেইলেই শান্তা তাওহিদাকে জানায়, ওয়েব পাতায় কিছু তথ্য যোগ করা হয়েছে। যোগ করা ওই তথ্যের বঙ্গানুবাদ করলে দাঁড়ায়, ‘২১ ফেব্রুয়ারি, এই তারিখটি বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন দিবসের সঙ্গে মিল রেখে নির্বাচন করা হয়েছিল, যেটি এই রেজ্যুলেশনের অন্যতম সহপৃষ্ঠপোষক। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০২ সালের রেজ্যুলেশনে এই দিবসের ঘোষণাকে স্বাগত জানায়।’
গতকাল মঙ্গলবার (জেনেভা সময়) জেনেভার রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান শান্তা তাওহিদাকে ই-মেইল করেন। তাতে বাংলায় শামীম আহসান বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে শান্তা তাওহিদাকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেন, ‘জাতিসংঘের অফিসিয়াল ওয়েব পাতায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত বর্ণনায় বাংলা ভাষা, ভাষা আন্দোলন ও ভাষা দিবসের কথা যুক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আপনার একক উদ্যোগ ও অবদানের কথা সব বাংলা ভাষাভাষীর জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
তবে আজ বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান টেলিফোনে বলেন, জাতিসংঘের ওয়েব পাতা থেকে বাংলাদেশের নাম মুছে ফেলার বিষয়টি তিনি দেখেননি। ব্যস্ত আছেন, পরে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানান।
জার্মানিতে থাকা শান্তা তাওহিদা টেলিফোনে আজ বলেন, ‘আমি জাতিসংঘের ওয়েব টিমকে আবার বিষয়টি জানিয়ে ই-মেইল করেছি। এখন পর্যন্ত তারা আমাকে কিছু জানায়নি। আমারও প্রশ্ন, তারা বাংলাদেশের নাম যুক্ত করার পর আবার কেন তা মুছে দিল।’ তথ্যসূত্র : প্রথম আলো