তিস্তা চুক্তি ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের সহায়তা চায় বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের কোনো সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দেওয়া হয়নি। ওই সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশ থেকে নির্মূল করায় আজ ভারতের সাত রাজ্যের নিরাপত্তা সমস্যা নেই। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার থেকে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তিস্তা চুক্তি করা হবে বলে বাংলাদেশকে আশ্বাস দিয়েছিল। বাংলাদেশের নির্বাচনের আর মাত্র সাত-আট মাস বাকি থাকলেও ওই চুক্তি এখনো হয়নি। ভারতীয় সাংবাদিকদের উচিত এ বিষয়টি তাঁদের সরকারের কাছে তুলে ধরা।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ-ভারত গণমাধ্যম সংলাপ-২০১৮-এর সমাপনী দিনে দেওয়া বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (আইসিএলডিএস) আয়োজিত তিন দিনের এই সংলাপে বাংলাদেশ ও ভারতের শীর্ষ স্থানীয় সাংবাদিকেরা অংশ নেন। তাঁরা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ বিপদে রয়েছে। তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে ভারতের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার চাপ দিতে ভারতের সাংবাদিকেরা যাতে ভূমিকা রাখেন, সেই আহ্বানও জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ’৭১-এ মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে ভারত। এ জন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। কিন্তু ভারতেরও মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতায় আসতে তাদের অনেকের সঙ্গে কৌশলগত ঐক্য করতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অনেক ভুলত্রুটি হতে পারে। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে, বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে হাত দিয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কৌশল নিয়ে ভারতীয় অনেক পত্রিকা সমালোচনা করেছে। কিন্তু তাদেরও মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে বিকল্প হিসেবে যারা আছে, তারা পাকিস্তানের মিত্র। তারা একসময় বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ধারায় নিয়ে যেতে চেয়েছিল। ভারতের সাত রাজ্যের সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমান বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি ক্ষেত্রে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নানা বিষয় নিয়ে যৌথ উদ্যোগ এগিয়ে চলেছে। তিস্তাসহ বেশ কিছু অভিন্ন নদীর পানির বণ্টন নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
ভারতীয় সাংবাদিক ভারত ভূষণ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবাদিকেরা নিজ নিজ দেশের সরকারের সমালোচনা করে থাকে। এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, আইসিএলডিএসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জমির ও নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদ, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১-এর প্রধান নির্বাহী মোজাম্মেল বাবু প্রমুখ।