বোটানিক্যাল-চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়
নিউজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটি উপভোগ করতে চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। ভোরে যে যার মতো ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে রাজধানীর অন্যতম দুইটি বিনোদনকেন্দ্রে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন।
কিশোর-কিশোরীরা দলবেঁধে যেমন বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে এসেছেন তেমনি স্ত্রী, সন্তান ও বাবা-মাকে নিয়েও অনেক দর্শনার্থীরা এসেছেন এই দু’টি বিনোদন কেন্দ্রে। চিড়িয়াখানায় পরিচিত-অপরিচিত প্রাণী ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে চেনা-অচেনা নানান উদ্ভিদ যেমন দেখছেন দর্শনার্থীরা তেমনি নিজের হাতে থাকা স্মার্টফোনটি দিয়ে তুলছেন সেলফিও। এই বিনোদনকেন্দ্রে দর্শনার্থীদের মধ্যে তরুণ-তরুণীদের সংখ্যায় বেশি দেখা গেছে।চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ভিড়ে ঠাসা। ছবি: শাকিল আহমেদবুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানা ও জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে মাতৃভাষা দিবসের ছুটি উদযাপনের এ চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, চিড়িয়াখানায় জিরাফ, বানর, উটপাখি, আফ্রিকান সাদা সিংহ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও পাখিদের খাঁচায় দর্শনার্থীদের ভিড় সব থেকে বেশি।
অন্যদিকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে বিভিন্ন ধরনের ফুল গাছ, বিশাল বিশাল বৃক্ষের আশপাশে দর্শনার্থীদের ঘোরাঘুরি ছিলও চোখে পড়ার মতো। বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি ছিল। তবে চিড়িয়াখানায় সবশ্রেণি ও বয়সের মানুষের উপস্থিতি বেশি থাকলেও বোটানিক্যাল গার্ডেনে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিত বেশি লক্ষ্য করা যায়।বোটানিক্যাল গার্ডেনে দর্শনার্থীদের ভিড়ে ঠাসা। ছবি: শাকিল আহমেদসরকারি চাকরিজীবী মো. রহমান আলী স্ত্রী- সন্তানকে নিয়ে ভোরে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পরিবার নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছেন। এ সময় তিনি নিজে দেড় বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে জিরাফ দেখাছেন ও জিরাফের বিষয়ে নানা কথা ছেলে সিয়ামকে অবগত করছেন।
রহমান আলী বলেন, ভাষা দিবস বাঙালি জাতির জন্য অন্যতম একটি গর্বের দিন। তাই তো আমরা এইদিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকি।ছেলেকে কোলে নিয়ে জিরাফ দেখাছেন মো. রহমান আলী। ছবি: শাকিল আহমেদ ভোরে শহীদ মিনারে ফুল দিয় ভাষা শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। যেহেতু আজকের দিনটি সরকারি ছুটি তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। চিড়িয়াখানায় এসে আমার ছেলে অনেক খুশি। ওর জন্যই এখানে আসা।
সিহাব, তানিয়া, আরিফ ও আলিফা চার বন্ধু মিলে আফ্রিকান সাদা সিংহের খাঁচায় সেলফি তুলছে। তারা বাংলানিজকে বলে, ছুটির দিনে চার বন্ধু-বান্ধবী মিলে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছি। নানা রকম ও নানা প্রজাতির প্রাণী একসঙ্গে এখানে দেখা যায় বলে এখানে এসেছি। চিড়িয়াখানায় এসে আমরা অনেক এনজয় করছি।
চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীরা বিভিন্ন প্রাণীর খাঁচায় খাঁচায় গিয়ে ঘোরাঘুরি বেশি করলেও বোটানিক্যাল গার্ডেনে দর্শনার্থীদের বৃক্ষরাজির শ্যামল ছায়ায় বসে গল্প করতে দেখা যায় বেশি তরুণ-তরুনীদের। কিন্তু অনেকেই আবার নানা প্রজাতি ফুল ও গাছ ঘুরে যেমন দেখছেন তেমনি এই আনন্দঘন মুহুর্তের ছবি নিজের হাতে থাকা স্মার্টফোনের ক্যামেরায় বন্দি করতে ভুলছেন না।
তানিয়া ও সজিব ভাষা দিবসের ছুটি উপভোগ করতে এসেছেন বোটানিক্যাল গার্ডেনে। তারা বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানীর অন্যসব বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে একটু বেশি ভিড় থাকে। এখানে শান্ত পরিবেশ। শহরে একটু প্রাকৃতিক পরিবেশে উপভোগ করতে এসেছি।
এ বিনোদনকেন্দ্র দু’টিতে কর্তৃপক্ষের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও দর্শনার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন প্রাণীর খাঁচার সামনে বিপদজনক স্থানে যেতে ও বিভিন্ন বিলুপ্ত প্রজাতির গাছে ফুল,ফল ও পাতা ছিঁড়তে দেখা যায়।