প্রধানমন্ত্রীর সফর : নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রাজশাহী
পাপন সরকার শুভ্র,রাজশাহী প্রতিনিধি : আগামীকাল ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী মহানগরীর মাদ্রাসা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে নজিরবিহীন নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পড়েছে রাজশাহী। নগরীতে র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘিরে এ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শহরজুড়ে নজরদারির মধ্যে নিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এছাড়া গাড়ী পার্কিংয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে ভাষণ দেবেন। ভেন্যু কেন্দ্রিক সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, এ ভেন্যু ঘিরে কোনও অপতৎপরতার সুযোগ কারো নেই। ভেন্যুর আশপাশ এলাকা ও পুরো শহর নিরাপত্তা বলয়ে ঢাকা রয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর চলাচলে নিরাপত্তার স্বার্থে এবং জনসভায় গমনাগমনে শৃঙ্খলার লক্ষ্যে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ- রাজশাহী ও নওগাঁ – রাজশাহী মহাসড়ক দিয়ে জনসভা অভিমুখী গাড়ীসমূহ সিটি বাইপাস হয়ে রখাদিয়া স্টেডিয়াম এলাকায় পার্কিং হবে। নাটোর- রাজশাহী মহাসড়ক দিয়ে জনসভায় আসা গাড়ীসমূহ ঢাকা বাস টার্মিনাল হয়ে সাগরপাড়া বটতলা এলাকায় পার্কিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে স্টীকারযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ গাড়ীগুলো জনসভা সংলগ্ন মাঠে (উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার মাঠ ও
টিচার্স ট্রেনিং কলেজ মাঠ) পার্কিং এর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে নগরীর গুরুতপূর্ণ এলাকাসমূহ যানজট মুক্ত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভেন্যুতে যাওয়ার আধা ঘন্টা পূর্ব হতে ভেন্যুতে চলাচলের রুটটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত রাখা হবে। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী সফর ঘিরে নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নগরীর সব সড়কে স্বাভাবিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে ও এ কেন্দ্রিক সব
পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে চেকপোস্ট বাড়িয়েছি, স্থায়ী চেকপোস্টের পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট। পুলিশের নিয়মিত রাত্রিকালীন অভিযান আরো জোরদার করা হয়েছে।
মহানগরীর সব থানাসহ জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশ বিশেষ তৎপরতার অংশ হিসেবে
স্ব স্ব এলাকায় নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ নজর রেখেছে। এতে কোন ধরনের
অপতৎপরতার সুযোগ নেই কারোর।
এএসপি ইফতে খায়ের আলম বলেন, এ ধরনের জনসভায় প্রচুর লোকজনের আগমন ঘটে,
বিষয়টি মাথায় রেখে ট্রাফিক ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছি। শহরের আবাসিক
হোটেলগুলোও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজরে রয়েছে। সব ধরণের অপতৎপরতা ও
নাশকতার সুযোগ যেন কেউ নিতে না পারে তার জন্য গোয়েন্দারা কাজ করছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে জামায়াত-শিবির সমর্থকদের নাশকতার তৎপরতার
সুযোগ নেই উল্লেখ করে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব
আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা রয়েছে, তাদের জন্য ঊর্ধ্বতন নির্দেশনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী সফর করবেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী
ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। এ জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। জনসভা ও এর আশপাশ এলাকাজুড়ে পাঁচ লাখ মানুসের সমাগম করার টার্গেট নিয়ে কাজ করছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
জনসভা সফল করতে রাজশাহী নগরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে লিফলেট বিতরণ
করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ সময় তারা জনসভায় যোগদানের জন্য সাধারণ
মানুষকের আমন্ত্রন জানান। নেতাকর্মীদের প্রচার প্রচারণায় এখন সরগরম
রাজশাহী। ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা রাজশাহী পৌঁছেছেন।