শুক্রবার, ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ইং ১১ই ফাল্গুন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে ধান বুননে ব্যস্ত সময় পাড়ি দিচ্ছেন কৃষক

ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর : কৃষি নির্ভর ও শস্য ভান্ডার বলে খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরাঞ্চল বাঞ্ছারামপুর উপজেলা। বাঞ্ছারামপুরের কৃষকরা কনকনে শীত উপেক্ষা করে বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বোরো মৌসুমের শেষ সময়ে দফায় দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে বোরো ধানের ফলনে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেই সাথে বাজারে ধানের ভাল দাম না পাওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন তারা।

তাদের সকল হতাশাকে দুরে ঠেলে দিয়ে আবারও এক বুক আশা নিয়ে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। তাদের আশা পূর্বের সকল লোকসানকে পুষিয়ে এবার লাভের মুখ দেখবেন তারা। সেই আশাতেই পুরোদমে বোরো ধান রোপনে কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। সরেজমিন বাঞ্ছারামপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ানে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার কৃষকরা উঁচু জমিতে রবি শস্য চাষ এবং নিচু জমিতে বোরো চাষে জমি প্রস্তুতকরণ, বোরো ধানের চারা উত্তোলন ও রোপণের কাজে সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পূর্বে রোপনকৃত বোরো ধানের চারা উত্তোলন করে তা চাষ দেওয়া জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে রোপন করছে কৃষকরা। প্রয়োজনীয় তেল সার বিদ্যুৎ সময়মত সরবরাহ নিশ্চিত করা হলে ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ধান বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের। বাঁশগাড়ি গ্রামের কৃষক আসাদ জানান,তিতাস নদীর তীরবত্তী এলাকার নিচু কিছু জমির পানি এখন নিষ্কাশন হয়নি। এরকম নিচু জমি রয়েছে প্রায় ৫০ হেক্টর।

আর পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতার কারণে ওই সকল জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করা যাচ্ছে না।স্তমলপুর গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী জানান, এবার ধানের চারা ভাল হলেও বোরো চারা রোপনের জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আরেক কৃষক ইদ্দিস আলী জানান, নদী ও বিলের অধিকাংশ এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ লাইন না পৌছায় তাদের ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে ভু-গর্ভের পানি উত্তোলন করে বোরো চাষ করতে হয়। যার ফলে বোরো চাষে উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে।

এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো.জামাল হোসেন জানান, এবার বাঞ্ছারামপুরে ১৩ ইউনিয়নে প্রায় ৮ হাজার ৬শত ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাঞ্ছারামপুরের প্রায় ৮০ ভাগ কৃষক তাদের বোরো ধান রোপণ শুরু করেছেন।

তিনি আরো জানান, বোরো ধানের চারা রোপনে সঠিক পদ্ধতি ও সরকার অনুমোদিত জাতের বীজের বোরো ধানের চারা রোপনে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগের আশা এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

Print Friendly, PDF & Email