রবিবার, ১০ই জুন, ২০১৮ ইং ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

‘গভীর রাতে সরকারি রাস্তার কাজ করা যাবে না,এটা কোথায় লিখা আছে ?’–নজরুল চেয়ারম্যান

ফয়সল আহেমদ খান,বাঞ্ছারামপুর থেকে : গণমাধ্যমে শ্রমিকের পরিবর্তে ভেকুমেশিন দিয়ে রাস্ত্ঘাাট তৈরী করছেন এমন সংবাদ প্রকাশের পর হতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগন এখন রাতের আধারে রাস্তা নির্মানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তা বাস্তবায়নের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গতকাল (বুধবার,২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ূবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.নজরুল ইসলাম নিজে উপস্থিত থেকে নগরীর চর গ্রামে নতুন সংযোগ সড়ক তৈরী করতে ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করেছেন।

বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে এই প্রতিবেদক তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গেলে ঘটনার সত্যতার প্রমান মেলে।পরে জানা গেছে,মাটি কাটার শ্রমিকদের বঞ্চিত করতে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো গরীব-অসহায় নারী-পুরুষ শ্রমিকদেও সরাসরি আর্থিক সহায়তা করার জন্য নামকাওয়াস্তে ৪০ দিনের কর্মসূচী হিসেবে বছরে ২ বার ডোর টু ডোর সহায়তা করার জন্য এই কর্মসূচী দেয়া হয়েছে।প্রকল্পে বলা হয়েছে,অবশ্যই শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে গ্রামের যে কোন উন্নয়নমূলক কাজ করা যাবে। সেই শ্রমিকের ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী সহ দুর্য্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনা সত্বেও কেন মাটিকাটাল শ্রমিকসহ দরিদ্রজনগোষ্ঠীকে পাশ কাটিয়ে তারা বা মিডিয়া বা প্রশাসন যেনো না জানে সেজন্য রাতে রাস্তা তৈরীতে ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করালেন কেন?” এমন প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার বিকেলে উক্ত ইউপি চেয়ারম্যান অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম চেয়ারম্যান জানান,-‘২শত টাকা দিয়ে শ্রমিক পাওয়া যায় না।তাই ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করিয়েছি।রাতের বেলা ঝামেলা কম,বাতাসও ঠান্ডা থাকে,ভেকু মেশিনের শিডিউল পাওয়া যায় রাতে-সে জন্য রাতে রাস্তার কাজ করিয়েছি।রাতে সরকারি রাস্তার কাজ করা যাবে না,এটা কোথায় লিখা আছে? ’’।

আরও : বাংলাদেশে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনে’ উদ্বেগ ইইউ পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্টের

উল্লেখ্য, প্রশাসন বিষয়টি জানলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।অভিযোগ রয়েছে যে,বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো.মহিদুল ইসলাম ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করা হচ্ছে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পরও প্রতি চেয়ারম্যানকে ১৪ লাখ টাকার প্রকল্পের অর্থেও চেক সই করে ছাড় দিচ্ছেন নিজে লাভবান বা ঘুষ নিয়ে।

যেনো-বাঞ্ছারামপুরে ভেকু দিয়ে অনিয়ম-দুর্ণীতি বাস্তবায়নে ইউপি চেয়ারম্যানদের অঘোষিত সিন্ডিকেট!!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ইউনিয়ন রয়েছে ১৩টি। ‘আসন্ন সংসদ নির্বাচনে শ্রমিক যদি কাজ না পেয়ে মনে মনে রাগ পুষে রাখে’ এমন চিন্তা না করেই আওয়ামীলীগ সমর্থক ও নৌকা মার্কা নিয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যানগন এক রকম সিন্ডিকেট কওেন প্রায় সব চেয়ারম্যানই শ্রমিকের পরিবর্তে ভেকু মেশিন দিয়ে কম টাকায় কাজ করাচ্ছেন। কিন্তু বিল তুলছেন আবার নামধারী শ্রমিক দিয়ে। যারা প্রকৃতার্থে শ্রমিক নয়।খোজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষিব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে সেই শ্রমিকের-এমন সরকারি নির্দেশ ও শর্তের কারনে চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন নিজ আত্বীয়স্বজন, দলীয় কর্মীদের মাটিকাটাল শ্রমিক দেখিয়ে ব্যাংকে হিসাব নম্বর খুলেছেন।যারা প্রকৃত শ্রমিক নয়।তেজখালি ইউনিয়নের রমজান মিয়া বলেন,আমাকে এক মেম্বার ৫ শত টাকা দিলো।বিনিময়ে আমি একাউন্ট করতে যা যা লাগে সব দিয়েছি।

বাঞ্ছারামপুর কৃষিব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত শাখা ব্যবস্থাপক মো.মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কোন চেয়ারম্যান ভেকু দিয়ে কাজ করিয়েছেন না-কি শ্রমিক দিয়ে করিয়েছেন, সে শ্রমিক আদৌ প্রকৃত শ্রমিক কি-না তা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। এটি দেখবেন প্রকল্প কর্মকর্তা। আমাদের কাছে কেউ এলে চেক নং এর সাথে হিসাব নম্বর মিলিয়ে এক হলে টাকা দিয়ে দিতে আমরা বাধ্য’।

এদিকে আজ বৃহসপ্রতিবার বিকেল থেকে তড়িঘড়ি করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় নতুন করে যে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগন ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে তারা হলেন,পাহাড়িয়াকান্দি ইউনিয়নের মো.গাজিউর রহমান,তেজখালির তাজুল ইসলাম,ছলিমাবাদের মতিন মিয়া ও সদর ইউনিয়নের আ.রহিম মিয়া।

Print Friendly, PDF & Email

এ জাতীয় আরও খবর

ব্রাহ্মণবড়িয়ায় বাক-বিতন্ডার জেরে ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতার ভিত্তিতেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: সু-চি

ফের ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ ৪ ফিলিস্তিনি নিহত

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনমন্ত্রী

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক বা জাতীয় সরকার করুন : বি. চৌধুরী

জেলা জাসদ’র আলোচনা, ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত