আখাউড়া এসএসসি ফল বিপর্যয় ! ফরম ফিলাপ নিয়ে বিপাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ

---
নির্বাচনী পরীক্ষায় এত বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী অকৃতকার্য হওয়ায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। অভিভাবকরা বলছেন শিক্ষকরা শ্রেণীকক্ষে সঠিকভাবে পাঠদান না করা এবং প্রাইভেট টিউশনে অধিক ব্যস্ত থাকায় এ বিপর্যয় ঘটেছে। তবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দাবি শিক্ষক স্বল্পতা, আসন সংকট ও ছাত্রছাত্রীদের অমনোযোগিতার জন্য ফলাফল খারাপ হয়েছে।
এদিকে ৭ নভেম্বর থেকে এসএসসি’র চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম ফিলাপ শুরু হয়েছে। নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্রছাত্রীদের ফরম পূরণ না করার ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা থাকায় এবছর বহু ছাত্রছাত্রীর ফরম পূরণ আটকে যেতে পারে। এ নিয়ে অভিভাবকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ২০১৮ সনে এসএসসি’র চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে উপজেলার ১৬টি বিদ্যালয়ে নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি মাসের ৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফলে এক একটি প্রতিষ্ঠানে শতকরা ৩০ থেকে ৭০ ভাগ ছাত্রছাত্রী অকৃতকার্য হয়। সবচেয়ে খারাপ করেছে মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয় থেকে ৩৯২ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মাত্র ১১১ জন পাশ করেছে।
এছাড়া পৌরশহরের নাছরীন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে ২৮০ ছাত্রী নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছে ১২৮জন, হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৮৪ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে পাশ করেছে ১১৩জন, দেবগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ২১০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১২৫ জন ও ছতুরা চান্দুপুর স্কুল এন্ড কলেজের ১৯৩ জনের মধ্যে পাশ করেছে ১৩১জন, ঘোলখার রানীখার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৩০ জনের মধ্যে ৭৫ জন এবং কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয় ৭৬ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৪৩ জন।
এ ব্যাপারে মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক অকৃতকার্য ছাত্রের বাবা বলেন, শিক্ষকরা ক্লাশে ঠিকমতো পড়ালে এত ছাত্রছাত্রী ফেল করতো না। তারা ক্লাশে না পড়িয়ে প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বেশি।
মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শশাঙ্ক কুমার রায় বলেন, ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত ক্লাশ করেনি। পড়ালেখায় অমনোযোগিতার কারণে তারা ফেল করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শওকত আকবর খান বলেন, শিক্ষক স্বল্পতা ও শ্রেণীকক্ষে আসন সংকটের কারণে ঠিকমত পাঠদান করতে না পারায় ফলাফল খারাপ হয়েছে।
এ ব্যপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, নির্বাচনী পরীক্ষায় এত বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী ফেল করার বিষয়টি খবুই উদ্বেগজনক। বিষয়টি ভালো করে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য, গত বছর আখাউড়া উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় শতকরা ৪৫ ভাগ পাশ করে। এনিয়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। এ বছর যাতে ফলাফল খারাপ না হয় সেজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্র-ছাত্রীদের ফরম পূরণ না করার নির্দেশনা দেয়া হয়।