ঈদের দুই সপ্তাহের পরও চামড়া বিক্রি না হওয়ায় বাঞ্ছারামপুরের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত !
---
ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : কোরবানি ঈদের ২ সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার অর্ধ শতাধিক বিভিন্ন প্রকার পশুর চামড়া অবিক্রিত থাকা ও মূল্য বৃদ্ধি না হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে, শুক্রবার উপজেলার বুধাইরকান্দি, সোনারামপুর, রুপুসদী, ফরদাবাদ, তেজখালী,আছাদনগর, উজানচরসহ বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে কথা ও পরিদর্শন করে দেখা গেছে গত ২ সেপ্টেম্বর কোরবারির ঈদ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত কোন পাইকার ঢাকা বা নারায়নগঞ্জ হতে চামড়া কিনতে আসে নি।ফলে,প্রতিদিন লবন দিয়ে চামড়া আবাসিক এলাকাগুলোতে রাখায় ‘পরিবেশ নষ্ট ও দূর্গন্ধর কারনে’- এলাকাবাসীর তোপের মুখে পানির দামে বা ‘যেন-তেন’ কম মূল্যে মুজদকৃত চামড়া বিক্রি করে দিতে তীর্থের কাকের ন্যয় বসে আছেন তারা।
বৃহত্তর কুমিল্লার দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার মোকাম বাঞ্ছারামপুরস্থ বুধাইরকান্দির মেসার্স ছিদ্দিক লেদার হাউস –এ ঈদের দিন বিকেল থেকে অল্প পরিমাণে কাঁচা চামড়া আসা শুরু হলেও আজ (শুক্রবার) ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশাল পরিমান চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা অবস্থায় মুজদ থাকতে দেখা গেছে।এদিকে,বহু চামড়া ব্যবসায়ী জানান,মূল্যবৃদ্ধির আশায় থেকে থেকে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।‘গোঁদের উপর বিষফোঁড় হয়ে দেখা দিয়েছে লবনের মূল্য বৃদ্ধি।
জানা যায়, আড়তদাররা আকারভেদে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজা ৩০০ টাকা পর্যন্ত দরে (চুক্তি) কাঁচা চামড়া কিনেছেন।
তবে মাঝারি আকারের চামড়ার মূল্য ৭০০ টাকা ৯০০ টাকার মধ্যে, সেগুলোই বেশি কিনছেন তারা। সংগৃহীত কাঁচা চামড়া কেনার পরপরই লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে লবণের দাম বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে চামড়া ব্যবসায়ীদের। চামড়ার ক্রয়মূল্যের সঙ্গে অতিরিক্ত সংরক্ষণ খরচ বহন করতে হচ্ছে তাদের। এসব চামড়া বিক্রির সময় লোকসানের ঝুঁকি পড়তে হলো ঈদের ২ সপ্তাহ পরও,চামড়ার মূল্য বৃদ্ধি না পাওয়ায়।
বাঞ্ছারামপুর এর বুধাইরকান্দির প্রবীন চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়ৎদার মো.ছিদ্দিকুর রহমান জানান,-‘আমি এতোটাই লোকসান দিচ্ছি যে,মুখে বলা সম্ভব নয়।১৫দিন অপেক্ষা করে ঢাকা হতে কোন চামড়ার পাইকার না আসায় শেষমেষ বাধ্য হয়ে নিজের টাকায় ট্রাক ভাড়া করে পুরান ঢাকার পোস্তগোলায় হাজার খানেক চামড়া আজ পাঠিয়ে দিচ্ছি।সেখানে যা মূল্য পাবো,তাতেই বিক্রি করে দেবো।’
সোনারামপুৃরের চামড়া ব্যবসায়ী মো.মজিবুর রহমান বলেন,-‘কি বলবো ভাই।চামড়া কেউ কিনতে আসে নাই বিধায় গত সপ্তাহে কিছু চামড়া তিতাস নদীতে মনের দু:খে ভাসিয়ে দিয়েছি।কারন,এগুলো থাকলে দৈনিক লবন দিতে হতো।এ ছাড়া আমার লক্ষাধিক টাকার চামড়া পঁেচ গেছে।চামড়ার ব্যবসা ছেড়ে দিবো’।