ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানির দরে চামড়া বিক্রি!
---
তৌহিদুর রহমান নিটল : কোরবানির পশুর চামড়া কৌশলগত কারসাজির কারণে অনেকাই পানির দরে ক্রয় করেছে মৌসুমী চামড়া ক্রেতারা। অভিযোগ রয়েছে, পৌর শহরসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিভিন্ন উপজেলায় সিন্ডিকেট চক্র কারসাজি করে চামড়ার দাম কমিয়ে দেয়। পাইকারদের চাহিদার অভাব দেখিয়ে কৌশলে চামড়া কেনার পথ অবলম্বন করে স্বল্প দামে চামড়া কিনে নেন মৌসুমী ক্রেতারা।
এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে। ক্রেতা না থাকায় বাধ্য হয়েই কম দামে চামড়া বিক্রি করেন কোরবানীদাতারা। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অসহায় হতদরিদ্র ও দুস্থ্য মানুষেরা। তাদের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে সিন্ডিকেট চক্র।
এ বছর জেলায় গড়ে গরুর চামড়া বিক্রি হয় ২ শ থেকে ৫ টাকা এবং মহিষের চামড়া ২শ থেকে ৪ টাকা। আর ছাগলের চামড়ায় ক্রেতারা হাত-ই দিতে চায় না। ছাগলের চামড়া বিক্রিয় হয় ৩০ টাকা সর্ব্বোচ্চ ১শ টাকায়। তবে চামড়ার দাম কমে যাওয়ার পেছনে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত। কেউ দুষছেন ট্যানারী মালিককে। আবার কেউ বলছেন স্থানীয় পাইকারকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারী ভাবে চামড়ার দর প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ঢাকায় ৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু স্থানীয় ক্রেতারা বাজার থেকে কাঁচামাল মানে চামড়া সংগ্রহে এই নির্দেশের কোন তোয়াককাই করেনি।
সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদ আসলে একটি প্রভাবশালী মহল চামড়া কেনার জন্য সিন্ডিকেট তৈরী করেন। ওই সিন্ডিকেট চক্রটি স্থানীয় মৌসুমী ব্যবসায়ী দিয়ে চামড়া সংগ্রহ করে। এদের মধ্যে রয়েছে, বিভিন্ন সংগঠনের নামধারী নেতা, জনপ্রতিনিধি ও পাড়া মহল্লার উঠতি যুবককেরা। ঈদের জামাতের পর পরই ওইসব মৌসুমী ক্রেতারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়ার কিনেন।
এক একটি গ্রামে ১০/১৫ জন চামড়া ক্রেতা বের হয়। বিক্রেতারাও সুযোগ বুঝে দর দাম করে যে বেশি দাম দেয় তার কাছে চামড়া বিক্রি করেন। কিন্তু এবছর দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও চামড়ার ক্রেতার দেখা মেলেনি। কৌতুহলী মনে অনেকেই ভাবেন চামড়ার ক্রেতা আসছে না কেন। বিকালে দু’একজন ক্রেতা এলেও ২/৩ শ টাকার বেশি চামড়ার দাম দিতে রাজি হয়ননি। তাই ক্রেতা না আসায় সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেকের চামড়া পড়ে থাকে বাড়ির আঙিনায়। যে কারণে একরকম বাধ্য হয়েই কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে চামড়াগুলো।
কয়েকজন চামড়া বিক্রেতা জানান, প্রভাব শালি সিন্ডিকেট বড় বড় পাইকারদের এলাকায় আসতে বাধা সৃষ্টি করে। প্রকৃত ব্যবসায়ীদেরকে শহরসহ গ্রামাঞ্চলে ডুকতে না দেয়ায় চামড়ার ভাল দাম পাওয়া যায়নি। ফলে তারা কম দামে চামড়া সংগ্রহ করে চড়া দামে বিক্রি করে দেয়।
পৌর এলাকার জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, এক লক্ষ ২৩ হাজার টাকায় কেনা ২টি গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাত্র ৫ শ টাকা। একই গ্রামের হোসেন মিয়ার ৬২ হাজার টাকা দামের গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাএ সাড়ে ৩ শ টাকায়। তিনি বলেন, গত বছর একই সাইজের পশুর চামড়া বিক্রি হয় প্রায় হাজার টাকায় মত।