মহিলা লীগ, ইয়াবা ফ্রেন্ডলি কমিটি!
---
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ঘোষিত কমিটি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। টেকনাফ মহিলা লীগ ইয়াবা সিন্ডিকেট ও বিএনপির দখলে চলে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির নির্দেশে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত ১২ জুলাই কক্সবাজার জেলা মহিলা লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা মোস্তাক ও সাধারণ সম্পাদক হামিদা তাহের স্বাক্ষরিত কমিটিতে টেকনাফ পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর কোহিনুর আক্তারকে সভাপতি ও সাবেক পুষ্টিকর্মী গোলাপজান আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এ কমিটির সভাপতির স্বামী শাহ আলম তালিকাভুক্ত চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি ও ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। আর সাধারণ সম্পাদকের স্বামী নূর হাকিম মিয়ানমারের নাগরিক। তাঁর মা-বাবাসহ পরিবারের কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব না পেলেও তিনি কৌশলে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য নূর হাকিম ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের ৭ এপ্রিল জরুরি অবস্থা চলাকালে টেকনাফ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ৫১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সভাপতি পৌর কাউন্সিলর নাজমা আলমের নেতৃত্বে জননেত্রী শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলনসহ কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই কমিটি জাতীয় নির্বাচনেও দলের পক্ষে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। জেলা আওয়ামী লীগের সভায় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা না করে ওই কমিটি বহাল থাকা অবস্থায় ৩৭ সদস্যের আরেকটি কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলার মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আলম বলেন, কোনো ঘোষণা ছাড়াই আমাদের বৈধ কমিটির আড়ালে কক্সবাজার শহরে বসে করা আরেকটি কাগুজে কমিটি দেখে বিস্মিত হয়েছি। ঘোষিত কমিটিতে তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি ও বিএনপি ঘরানার শাহ আলমের স্ত্রীকে সভাপতি এবং সাবেক পৌর ছাত্রদলের নেতা নূর হাকিমের স্ত্রীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। ঘোষিত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দলের সদস্য পর্যন্ত ছিলেন না। ফলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাসী আদর্শ কমিটি উপহার দেওয়া হলো, নাকি বিএনপি-জামায়াতের দোসরদের পুনর্বাসন করা হলো, তা ভেবে দেখতে হবে।
তবে নবগঠিত কমিটির সভাপতি কোহিনুর আক্তার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সংগঠনকে উজ্জীবিত করতে এমপি আব্দুর রহমান বদি উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁর পরামর্শে জেলা কমিটি আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে। আলোচ্য কমিটি নিয়ে কক্সবাজার জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদা তাহের বলেন, স্থানীয় এমপি আব্দুর রহমান বদির অনুরোধে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে নতুন করে সম্মেলন অনুষ্ঠান করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল বশর বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে যাদের অবদান ছিল, তাদের বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ও ইয়াবা সম্পৃক্ত পরিবারের লোকজনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে মহিলা আওয়ামী লীগকে কালিমা লেপন করা হয়েছে। এ ধরনের কমিটি ঘোষণা জননেত্রী শেখ হাসিনার ইয়াবাবিরোধী ঘোষণার চরম বিরোধিতার শামিল। এদিকে সম্মেলন না করে অবৈধভাবে আরেকটি কমিটি ঘোষণার প্রতিকার চেয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। কালের কণ্ঠ