মোরশেদ খান ও স্ত্রীর আগাম জামিন
---
সিটিসেলের নামে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপি নেতা এম মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী নাসরীন খানসহ ১৩ আসামিকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট।
এই জামিনের মেয়াদ শেষে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
মোরশেদ খান ও তার স্ত্রীর আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, আরশেদ রউফ ও বাহার উদ্দিন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
সিটিসেলের নামে এ বি ব্যাংক থেকে অনিয়মের মাধ্যমে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ গত ২৮ জুন এ মামলা করে দুদক।
রাজধানীর বনানী থানায় করা এই মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খান, তার স্ত্রী নাসরিন খান, সিটিসেলের এমডি মেহবুব চৌধুরী এবং এবি ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান এমডিসহ মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার পর গত ১ জুলাই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মেহবুব চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে দুদক। পরদিন ঢাকার হাকিম আদালত থেকে তিনি জামিন পান।
আদেশের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, “তিনটি পৃথক আবেদনে ১৩ জনকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে তাদেরকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।”
দেনার দায়ে গত বছর বন্ধ হয়ে যাওয়া সিটিসেলের হাত ধরেই দেড় যুগ আগে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন সেবার যাত্রা শুরু হয়েছিল।
১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিএল) নামে টেলিকম সেবা পরিচালনার লাইসেন্স পায় বর্তমান সিটিসেল। পরের বছর হংকং হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে বিটিএল নাম বদলে হয় হাচসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল)।
১৯৯৩ সালে মোরশেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মটরস ও ফারইস্ট টেলিকম মিলে এইচবিটিএল-এর শেয়ার কিনে নিলে এ কোম্পানির মালিকানায় পরিবর্তন আসে। কোম্পানির নাম বদলে হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড।
প্যাসিফিক মটরস যখন সিটিসেলের মালিকানায় আসে, মোরশেদ খান তখন মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিনিয়োগ বিষয়ক বিশেষ দূতের দায়িত্বে। আর এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে সিটিসেল যখন লাইসেন্স পায়, মোরশেদ খান তখন ছিলেন জাতীয় পার্টিতে।
একমাত্র অপারেটর হওয়ার সুযোগে সিটিসেল বিএনপি সরকারের সময়ে একচেটিয়া ব্যবসা করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর আরও কোম্পানিকে মোবাইল ফোন সেবার লাইসেন্স দেওয়া হলে সেই একচেটিয়া ব্যবসার অবসান ঘটে।
এরপর ধুকতে থাকা এই কোম্পানিতে ২০০৪ সালে বিনিয়োগ করে সিঙ্গাপুরের সিংটেল। কিন্তু ব্যবসার আর প্রসার ঘটেনি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ কোম্পানির ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক মোরশেদ খানের প্যাসিফিক মোটরস লিমিটেড।