বৃহস্পতিবার, ১৩ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৯শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া-মাওনা সড়কে বেহাল দশা

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ১১, ২০১৭

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম সড়ক কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া-মাওনা সড়কটি। কালিয়াকৈর থেকে ফুলবাড়িয়া পর্যন্ত এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়নি।

দীর্ঘদিনের সংস্কারের অভাবে সড়কটি জনগণের নিকট এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। তাই এক প্রকার নিরুপায় হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে সাধারণ মানুষ। অথচ অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়কটি স্থায়ীভাবে সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। আর এতে করে জনদুর্ভোগ এখন চরম আকার ধারণ করেছে ।

জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) গাজীপুর এর অধীনে কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া-মাওনা সড়কটি। বিগত প্রায় ২ থেকে ৩ বছর ধরে সড়কটির বেশিরভাগ স্থানেই খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ ও এলাকাবাসির পক্ষ হতে খানা-খন্দগুলো জোড়াতালি দিলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই সড়কটি আগের অবস্থানে চলে যায়। এলাকাবাসির অভিযোগ প্রশাসনের খামখেয়ালিপনার কারণেই সড়কটির এমন বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে সড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, কালিয়াকৈর বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে ফুলবাড়িয়া পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার সড়কের প্রায় পুড়োটা জুড়েই খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। এছাড়া একটু বৃষ্টি হলেই খানা খন্দগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে নাজেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে নালার সৃষ্টি হয়েছে। নেই পানি নিষ্কাশনের কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সড়কটি দিয়ে চলাচল করছে আশাপাশের শিল্প-কলকারখানার যানবাহনসহ স্কুল-কলেজ ও পেশাজীবি মানুষ।

নামাশুলাই বাজার, মেদী আশুলাই বাজার, চেয়ারম্যান বাড়ি, পাইকপাড়া, জাথালিয়া, ফুলবাড়িয়া, বেতারকেন্দ্র পয়েন্টে সড়কটির অবস্থা বেশি বেহাল। প্রায়ই সড়কের ভিন্ন ভিন্ন পয়েন্টে বাস, পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান আটকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন পয়েন্টে খানা-খন্দে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার কারণে যাত্রীসহ অটোরিকশাও আটকে যায়। বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দ্যেশ্যে রওনা হচ্ছে যাত্রীরা।

এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে গাজীপুরের মাওনা থেকে কলকাতাগামী যাত্রীবাহী পরিবহন ফাইভ স্টার চলাচল করে থাকে। ফলে সড়কটির গুরুত্ব দিনদিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু সড়কের বেহাল দশার কারণে জনগণকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তা বশির আহমেদ মুঠোফোনে বিবার্তাকে বলেন, সড়কটির বেহাল অবস্থা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে, সওজ-এর পক্ষ থেকে সড়কের সংস্কার কাজের কথা বললেও বাস্তবে তার বিন্দুমাত্র চিত্র লক্ষ্য করা যায়নি। এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের দাবি, সড়কটি অতি দ্রুত যাতে সংস্কার করা হয়।

কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান আসাদ ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ সড়কটি খানা খন্দে ভরে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে যায়। ফলে যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে স্কুল কলেজ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সড়কের এমন বেহাল দশা দেখে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিন রেজাকে অবহিত করেন। কিন্তু বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

কথা হয় কালিয়াকৈর থানার এসআই মো. নজরুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। সড়কে চলাচল করতে খুব সমস্যা হয়।

ফুলবাড়িয়া ইউপি সদস্য মো. লোকমান হোসেন জানান, কালিয়াকৈর থেকে ফুলবাড়িয়া পর্যন্ত এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়নি। সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই নাজেহাল অবস্থায় রয়েছে। জনগণের নিকট সড়কটি এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা মো. সফি উদ্দীন সফি জানান, সড়কটির এমন করুণ অবস্থা হয়েছে যে, যানবাহন তো পরের কথা পায়ে হেটেঁও চলাচল করা দুস্কর। সড়কটি যদি দ্রুত সংস্কার না করা হয় তাহলে জনগণের দুর্ভোগ বেড়েই চলবে।

এ জাতীয় আরও খবর