দ্রুত বিচার আইনের মামলার আসামি খুঁজে পায় না পুলিশ!
---
সরাইল প্রতিনিধি : বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভি ও দৈনিক যুগান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মো. শফিকুল ইসলামের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত দ্রুত বিচার আইনের মামলায় কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ। বাদী পক্ষের দাবি, আসামিরা নিজ এলাকাতেই প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছেন। মামলার প্রধান আসামিকে রক্ষা করতে তার ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মামলাটিকে প্রভাবিত করছেন। যদিও পুলিশ বলছে, আসামিরা এলাকায় নেই, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জুন বিকেলে সাড়ে ৫টায় জেলার আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম তার সহকর্মীদের সঙ্গে বসে কথা বলছিলেন। সেখানে প্রেসক্লাবের সভাপতি সেলিম পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাচ্চুসহ কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এসময় উপজেলার চরচারতলা গ্রামের মিজান মিয়া নামের এক যুবকসহ তার সহযোগীরা শফিকুলের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়।
হামলাকারীদের এলোপাতাড়ি মারধরের শিকার শফিকুল তার ডান চোখে ও মাথায় মারাত্বক আঘাত পান। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ডে-নাইট হাসপাতাল ও পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন রোববার (২৫ জুন) আহত শফিকুলের ভাই খন্দকার ইমরান বাদী হয়ে মিজান মিয়াকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরও ১৫/১৬ জনের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে রেকর্ড করে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ।
তবে হামলার ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেফতার না হওয়ায় সুষ্ঠু বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী।
অভিযোগ রয়েছে, মামলার প্রধান আসামি মিজান মিয়া আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান কবিরের বড় ভাই। কবির জেলার এক প্রভাবশালী সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পুরো আশুগঞ্জে পরিচিত। তিনি সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তার ভাই মিজানকে রক্ষা করার জন্য মামলাটিকে প্রভাবিত করছেন। তার প্রভাব বিস্তারের কারণেই পুলিশ এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ মামলার বাদীর।
অভিযোগের সত্যতা জানতে আতাউর রহমান কবিরের মুঠোফোনে (০১৭১১২২৩১৩৬) একাধিকবার চেষ্টা করেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
মামলার বাদী খন্দকার ইমরান জানান, মামলার সব আসামিরাই এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে। অথচ ‘রহস্যজনক’ কারণে গ্রেফতার অভিযানে বের হয়েও পুলিশ তাদের খুঁজে পায় না। তাই তিনি তার ভাইয়ের উপর হামলার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তবে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) লাগানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারও বিষয়টি তদারকি করছেন। পাশাপাশি বাদী পক্ষকেও বলা হয়েছে কোথাও কোনো আসামিকে দেখামাত্রই যেন আমাকে জানান। মামলাটি প্রভাবিত করার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের উপর কোনো চাপ নেই। প্রধান আসামি কার ভাই সেটি আমার জানা নেই, জানার দরকারও নেই। সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়টি আমরা শক্তভাবে দেখছি এবং আসামি গ্রেফতার হবেই।