যেসব খাত থেকে শুল্ক প্রত্যাহার ও পুনর্বিন্যাস হলো
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : ভ্যাট আইন প্রত্যাহার ও ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক কমিয়ে সংসদে জাতীয় অর্থবিল-২০১৭ পাস হয়েছে। বুধবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কন্ঠভোটে পাস হয়। আর এবারের বাজেটে বেশ কয়েকটি খাতে শুল্ক প্রত্যাহার ও পুনর্বিন্যাস হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটের শুল্ক প্রত্যাহার ও পুনর্বিন্যাস প্রসঙ্গে বলেন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে একটি সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রম হিসেবে আমরা বিবেচনা করবো এবং ধ্যান অথবা যোগ (মেডিটেশন)-এর উপরে আগামী ২ বছরে কোন ভ্যাট আরোপ হবে না।
কম্পিউটার, সেলুলার ফোন এবং তার যন্ত্রাংশ এখন দেশে তৈরি হচ্ছে। এগুলোকে মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করে তাদেরকে মূসক অব্যাহতি প্রদান করা হবে।
শিপ ব্রেকার্স এন্ড রিসাইকেল এসোসিয়েশন বাংলাদেশের বিষয়ে বর্তমানে বলবৎ প্রজ্ঞাপনই বহাল থাকবে। তবে মোটর সাইকেল শিল্পের উপর স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে আরোপনীয় সমুদয় মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করেন।
এছাড়া মাইক্রোসফট বাংলাদেশ লিমিটেড অনেক সফটওয়্যার আমদানি করে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রদান করে। এবং কতিপয় পণ্য বিনা আমদানি শুল্কে আমদানি করে। যেসব পণ্যে আমদানি শুল্ক নেই সেগুলোর উপরে প্রস্তাবিত ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
রেফ্রিজারেটর উৎপাদনের ওপর আরোপিত শুল্ক বা কর হার অবনমিত করে সংযোজনকারীদের উপর প্রযোজ্য ৩০ শতাংশের স্থলে ২০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। প্লাস্টিক ও গ্লস ফাইবার নির্মিত এলপিজি কন্টেইনারের উপর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট আরোপ না করার প্রস্তাব করা হয়। এলপিজি সিলিন্ডার এখনো ব্যাপকভাবে আমদানি নির্ভর। তাই স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় আমদানি পর্যায়ে লৌহনির্মিত এলপিজি কন্টেইনারের উপর ভ্যাট বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
দেশে সোলার প্যানেল তৈরি হওয়ায় অধিকহারে সোলার প্যানেলের উপর যে আমদানি শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছিল সেটি বাদ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তৈরি পোশাক খাতে উৎসে কর ১ শতাংশ বহাল থাকবে। তবে সবুজ কারখানার ক্ষেত্রে আয়কর হার ১০ শতাংশ এবং অন্যদের ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। একইভাবে গুড়া মসলা জাতীয় মরিচ, হলুদ, ধনিয়া এগুলোর ট্যারিফ মূল্য বহাল রেখে ভ্যাটের হার নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ভ্যাট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যগণ এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আমি মূসক আইনের পূর্ণ কার্যকারিতা পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করছি। আগের ধারাবাহিকতায় কিছু সংশোধন করে ২০১২ সালের আইনই যেভাবে গত চার বছর ধরে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হচ্ছে ঠিক তেমনিভাবে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, অনন্তকালের জন্য সঞ্চয়পত্রের সুদের হার নির্দিষ্ট থাকতে পারে না। সুদের হারের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে, মূল্যস্ফীতি বাড়লে সুদের হার বাড়ে আর মূল্যস্ফীতি কমলে সুদের হার কমে। বিষয়টি তাই আমাদের পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
তবে, আমরা চাচ্ছি সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে যে সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে তা যেন সঠিক ব্যক্তিরা পায়। এজন্য আমরা এর একটি পুর্ণাঙ্গ তথ্য-ভান্ডার তৈরি করবো যেখানে ক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের সাথে সঞ্চয়পত্রের তথ্যকে সম্পৃক্ত করা হবে। পাশাপাশি, পেনশন সুবিধা সর্বস্তরের জনগণের জন্য বিস্তৃত করতে চাই।